ভেঙে ফেলা হচ্ছে এরশাদ শিকদারের আলোচিত 'স্বর্ণকমল'

সংগৃহীত ছবি

ভেঙে ফেলা হচ্ছে এরশাদ শিকদারের আলোচিত 'স্বর্ণকমল'

বাবুল আকতার, খুলনা: 

খুলনার এক সময়কার সন্ত্রাসীদের গডফাদার বহুল আলোচিত এরশাদ শিকদারের স্বর্ণকমল বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। আজ বুধবার সকাল থেকে দোতলা এ ভবনের ছাদ ভাঙ্গা শুরু করেছে নির্মাণ শ্রমিকরা। তবে এ সময় এরশাদ শিকদারের পরিবারের কাউকে সেখানে দেখা যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে এই বাড়িটি ভেঙে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত খুলনার রেলওয়ের ও বিভিন্ন জনের ব্যক্তিগত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় এরশাদ শিকদার। ৬০টিরও বেশি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তিনি। রাজনীতিতে প্রবেশ করার পর আরও ক্ষমতাসীন হয়ে ওঠেন ৪ ও ৫ নম্বর ঘাটের এই কুলি সরদার। পরে তিনি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনারও নির্বাচিত হন।

ওই সময় তিনি নগরীর সোনাডাঙ্গার মজিদ স্মরণিতে নির্মান করেন বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল। ’

১৯৯৯ সালে  ওয়ার্ড কমিশনার থাকা অবস্থায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় এরশাদ শিকদার। ২৪টি হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন তার দেহরক্ষী নুরে আলম। ২০০৪ সালের ১০মে মধ্যরাতে খুলনার জেলা কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এর পর থেকে এরশাদ শিকদারের বহু অপকর্মের সাক্ষী  হয়ে থাকে এই ‘স্বর্ণকমল।  

দেশ -বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসতে থাকে এক নজর এই বাড়িটি দেখার জন্য। বাড়িটিতে গোপন কুঠরি এবং অস্ত্র ভাণ্ডার এবং বিভিন্ন গোপণ স্থানে নগদ কোটি কোটি টাকা লুকানোর গল্পও শোনেন সাধারণ মানুষ। যে কারনে সবার মধ্যে ‘স্বর্ণকমল  বাড়িটিকে ঘিরে নানা কৌতুলও জন্ম নেয়। এক সময় শহরের নামীদামী ব্যক্তিদের যাতায়াত ছিল স্বর্ণকমলে। প্রায়ই জলসা বসত এই বাড়িটিতে। যার জন্য সাধারণ মানুষের খুব আগ্রহের একটি জায়গা ছিল ‘স্বর্ণকমল’। সবার মুখে আলোচনা আর সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ওই বাড়িটি।

২০০৪ সালের ১০মে খুলনা জেলা কারাগারে এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর তার প্রথম পক্ষের স্ত্রীসহ ছেলে মেয়েরা ‘স্বর্ণকমল’ এর দোতলা বসবাস করতেন। সেখানে তারা দোতলায় মুরগীর ফার্মও করে ছিলেন। এরশাদ শিকদারের মৃত্যুর দীর্ঘ ১৯ বছর পর আজ বুধবার সকাল থেকে যখন নির্মাণ শ্রমিকরা স্বর্ণকমল বাড়ি ভাঙ্গার কাজ শুরু করে, ঠিক তখন উৎসুক মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। এমনকি সংবাদ কর্মীরাও সেখানে হাজির হয়। এ সময় বাড়িটির ছবি তুলতে গেলে বাড়ির ভেতর থেকে সাংবাদিকদের লক্ষ করে ইট ছুড়ে মারে। তবে এ ব্যপারে বাড়ির মালিক পক্ষের কারো কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।  

news24bd.tv/desk