বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতের বৃত্তি, আবেদন যেভাবে

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভারতের বৃত্তি, আবেদন যেভাবে

অনলাইন ডেস্ক

ভারতে উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস (আইসিসিআর) বৃত্তি দেয়। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে এই বৃত্তির জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে। আবেদন করা যাবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।

ভারতের বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির মধ্যে আইসিসিআর শিক্ষাবৃত্তি অন্যতম।

এ বৃত্তির মাধ্যমে ভারতের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পুরোপুরি বিনা খরচে পড়ালেখা করার সুযোগ মিলবে। মেডিসিন, প্যারামেডিকেল, ফ্যাশন, আইন, ইত্যাদি সংক্রান্ত কোর্স বাদে ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে। স্নাতক ও মাস্টার্সে পড়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। পিএইচডি করতে চাইলে সর্বনিম্ন বয়সসীমা ৪৫।

প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ইংরেজির দক্ষতা প্রমাণের জন্য ৫০০ শব্দে একটি প্রবন্ধ লিখতে হবে। টোফেল, আইইএলটিএসের স্কোরও জমা দিতে পারবে। যদিও তা বাধ্যতামূলক নয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নম্বরপত্র ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইংরেজিতে না থাকলে ইংরেজিতে অনুবাদ করে জমা দেওয়া যাবে। অনুবাদ করা ছাড়া কাগজপত্র গ্রহণ করা হবে না। আইসিসিআর বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ন্যূনতম ৫ লাখ ভারতীয় রুপি বা ৬ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলারের মেডিকেল বিমা করা বাধ্যতামূলক।

সাধারণত ৭৩টি দেশের শিক্ষার্থীদের আইসিসিআরের বৃত্তি দেয়া হয়ে থাকে। প্রতি বছরই নির্দিষ্টসংখ্যক (সাধারণত দুইশ’র কাছাকাছি) বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এ বৃত্তির মাধ্যমে ভারতে পড়াশোনা করতে যেতে পারেন। এ বৃত্তির আওতায় স্নাতক পর্যায়ে ১৪০টি, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৪০টি এবং এমফিল বা পিএইচডিতে ২০টি আসন রয়েছে।

ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা আলাদা বিষয়ভিত্তিক তালিকা দেয়া রয়েছে, যা পিডিএফ ফরম্যাটে ডাউনলোডের মাধ্যমে শিক্ষার্থী নিজের আগ্রহ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান বাছাই করতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান, কলা, সামাজিকবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান ইত্যাদি অনুষদ। তবে চিকিৎসাবিজ্ঞান এর আওতাধীন নয়।

এ শিক্ষাবৃত্তিতে রয়েছে মাসিক স্টাইপেন্ডের (ভাতা) ব্যবস্থা। কোর্সের ধরনের ওপর নির্ভর করবে ভাতার পরিমাণ। সাধারণত স্নাতকের শিক্ষার্থীরা ১৮ হাজার রুপি, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা ২০ হাজার রুপি, পিএইচডি শিক্ষার্থীরা ২২ হাজার রুপি এবং পোস্ট ড. শিক্ষার্থীরা ২৫ হাজার রুপি মাসিক ভাতা পেয়ে থাকেন। বৃত্তিপ্রাপ্তদের কোনো টিউশন ফিও দিতে হয় না। বৃত্তির জন্য আলাদা কোনো আবেদনমূল্যও নেই।


আবেদনের যোগ্যতা ও খুঁটিনাটি বিষয়
আবেদনের যোগ্যতায় বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ১৮ থেকে ৩০ বছরের শিক্ষার্থীরাই শুধু এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া শিক্ষাজীবনে পরীক্ষার ফলাফলও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে অন্তত ৬০ শতাংশ নম্বর থাকতে হবে। স্নাতকের ফলাফল অন্তত সিজিপিএ ২.৫ হতে হবে। অতিরিক্ত কোর্স, যেমন টোফেল বা আইইএলটিএস এখানে বাধ্যতামূলক না হলেও বাড়তি অর্জন হিসেবে গণ্য করা হবে।

আবেদনের আগে সব কাগজপত্র গুছিয়ে রাখা জরুরি। পাসপোর্টের অনুলিপি, সব নম্বরপত্র ও সনদের মতো মৌলিক নথি ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুপারিশপত্র ও মেডিকেল ফিটনেস ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে। ফিটনেস ফরমটি আইসিসিআর অনলাইন পোর্টালেই পাওয়া যায়। এ ছাড়াও প্রতি শিক্ষার্থীকে নিজের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য ইংরেজি ভাষায় ৫০০ শব্দের একটি নিবন্ধ জমা দিতে হবে, যা হতে হবে সম্পূর্ণ মৌলিক।

আবেদনের প্রক্রিয়া
আগে আইসিসিআরের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি আবেদন করা গেলেও গত বছর থেকে আরেকটি বিকল্প চালু হয়েছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এ বৃত্তির আবেদনের জন্য একটি আলাদা ওয়েবসাইট (https://www.sjsdhaka.gov.in/) খোলা হয়। এর মাধ্যমে নিজের তথ্য প্রদান করলে আবেদনকারী সহজেই আইসিসিআরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে যেতে পারবেন। সেখানে আগে থেকে কোনো অ্যাকাউন্ট তৈরি করা না থাকলে সাইন আপ করে নিতে হবে। আবেদনের সময়সীমার মধ্যে সেখানে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরির মাধ্যমে প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে হবে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি এ বছর আইসিসিআর বৃত্তির জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি প্রাতিষ্ঠানিক ফেসবুক পেজে ঘোষণাটি সম্পর্কে জানানো হয়। এ বৃত্তির জন্য আবেদনের সময়সীমা দেয়া হয়েছে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। আবেদনের আগে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে পছন্দের কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে, যাতে পরবর্তী প্রক্রিয়া সহজ হয়।

এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের সমতুল্য একটি সনদ সংগ্রহ করতে হবে, যার জন্য এ https://evaluation.aiu.ac.in/student/login, এ অনলাইন ঠিকানায় আবেদন করতে হবে। অতিরিক্ত তথ্যের জন্য শিক্ষার্থীরা চাইলে বারিধারায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের শিক্ষা শাখায় যোগাযোগ করতে পারেন। ইমেইলে যোগাযোগের ঠিকানা হচ্ছে edu1.dhaka@mea.gov.in ; এ ছাড়া অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে এই অনলাইন ঠিকানায় https://www.sjsdhaka.gov.in/  

news24bd.tv/SHS

সম্পর্কিত খবর