প্রবীণ রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য আর নেই। সোমবার রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৩ বছর।
সোমবার রাতে নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশনকে পঙ্কজ ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার পরিবারের সদস্য কাজল দেবনাথ।
তিনি জানান, গত ১৭ এপ্রিল থেকে পান্থপথ হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। এদিন রাত ১২টা ২৮ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকার কর্মী দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ভুগছিলেন। শনিবার সকালে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট ও ভেন্টিলেটরে নেওয়া হয়।
পঙ্কজ ভট্টাচার্যের শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিলো। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর তিনি কয়েকবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। নতুন করে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর সোমবার তাঁকে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান তাঁর ভায়রা ডা. মানস বসু।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য সম্পর্কে
পঙ্কজ ভট্টাচার্য ১৯৩৯ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে ১৯৫৯ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হন। পঙ্কজ ভট্টাচার্য গত শতকের ষাট দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ এবং পরবর্তী বাংলাদেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী, একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী ও সংগঠক।
১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ও পরে কার্যকরী সভাপতি নির্বাচিত হন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। তিনি ১৯৬৬ সালে ‘স্বাধীন বাংলা ষড়যন্ত্র’ মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারারুদ্ধ হন। মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-ছাত্র ইউনিয়ন-কমিউনিস্ট পার্টি গেরিলা বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৩ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গণফোরাম গঠনের সময় তিনি ছিলেন দলটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। পরে সম্মিলিত ‘সামাজিক আন্দোলন’ নামে দেশের প্রগতিশীল-গণতান্ত্রিক মানুষের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলেন। তিনি ঐক্য ন্যাপ নামক একটি রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্বে ছিলেন। অল্প বয়সে কৃতী ফুটবলার ছিলেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য। লেখালেখি ও সংস্কৃতিচর্চায় বরাবর তাঁর আগ্রহ ছিল।