বেঁড়িবাধ না থাকায় ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কের পর এবার নোয়াখালীর উপকূলবাসী নদী ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। উপকূলীয় হাতিয়ার উত্তরে বয়ারচরের দক্ষিণ ইসলামপুর, চানন্দী ইউনিয়নের ভূমিহীন বাজারের দক্ষিণে জনতা বাজার এলাকায় অন্তত ২০ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ না থাকায় হাজার হাজার মানুষ ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্কের পর এবার ভাঙ্গন আতঙ্কে আতঙ্কিত রয়েছেন। বিষয় সম্পত্তি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন তারা।
গত ২ বছরে হাতিয়ার উত্তরাঞ্চলে চানন্দী ও হরনী ইউনিয়নে অন্তত ২০ কিলোমিটার জায়গা ও মানুষের বাড়ি ঘর, বাজার, স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা মেঘনা নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে।
সহায় সম্পত্তি হারিয়ে অনেকে বিভিন্ন স্থানে চলে গেছে, আবার অনেকে খোলা আকাশের নিচে অন্যের জায়গায় বসবাস করছে। তাদের একটাই দাবি এই নদী ভাঙন প্রতিরোধ করার জন্য স্থায়ীভাবে ব্লক নির্মাণ ও জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা। এ নদী ভাঙন নিয়ে তারা চরম আতঙ্কে রয়েছে। ৫ বছরেও এ অঞ্চলে ভাঙন প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এমনটি অভিযোগ স্থানীয়রা।তারা জানান, মাঝে মধ্যে ভাঙন প্রতিরোধের নামে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তাদের অভিযোগ হয়তো ভাঙন প্রতিরোধের নামে লুটপাট হতে পারে।
নোয়াখালীর উপকূলীয় হাতিয়া, সূবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাকে দূর্যোগ পূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসকল উপকূলীয় নদীর পাড়ে চর অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ বেঁড়িবাধ না থাকায় আতঙ্কিত রয়েছেন। কারণ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে স্বাভাবিক এর চেয়ে ৫-৬ ফুট জোয়ারের পানি এ সকল চর অঞ্চলে ওঠে। এতে মানুষের বাড়ি ঘর ডুবে যায় এবং গরু, ছাগল ভেসে যায় প্রবল জোয়ারের পানিতে। এ কারসে আতঙ্কে রয়েছে উপকূলবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সাল জানান, হাতিয়া ও সুবর্ণচরের ভাঙন প্রতিরোধ করার জন্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন হলে দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, উপকূলীয় হাতিয়ার এ এলাকায় বেঁড়িবাধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অচিরেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর ও ১৯৯১ সালে উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এরপর সিডোর ও আইলা সহ বড় বড় ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
news24bd.tv/তৌহিদ