তালাবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি মিলছে মরিয়ম-নূরের

সংগৃহীত ছবি

তালাবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি মিলছে মরিয়ম-নূরের

অনলাইন ডেস্ক

দেড় বছর পর তালাবদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি মিলছে মরিয়ম ও নূরের। একইসঙ্গে সংগ্রামী বাবা রনি সিকদার ফিরোজের কর্মসংস্থান ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে বরিশাল জেলা প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ খাদ্যসামগ্রী ও নগদ টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকালে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান নিজেই গাড়িতে করে চাল, শিশুদের জন্য আম ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হন ফিরোজের বাসায়।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কামরুজ্জামানসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

মনিরুজ্জামান বলেন, প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে জানতে পারি এক বাবা তার দুই অবুঝ শিশু সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জীবিকার তাগিদে শিশুদের তালাবদ্ধ করে রেখে যেতে হয় তাকে। আমি অসহায় পরিবারটির খোঁজ নিতে এসেছি।

প্রাথমিকভাবে চাল ও নগদ টাকা পৌঁছে দিয়েছি।

তিনি বলেন, সরকার পরিচালিত ডে কেয়ার সেন্টারে শিশুদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা আগামী রোববার (১৬ জুলাই) এসে তাদের ডে কেয়ার সেন্টারে নিয়ে যাবে। শিশু দুটি এরপর সরকারের তত্ত্বাবধায়নে থাকবে। পাশাপাশি তাদের বাবা ফিরোজকে কর্মসংস্থান ও বসবাসের জন্য আমরা ব্যবস্থা করবো।

প্রবেশন কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, ডে কেয়ার সেন্টারে প্রতিদিন সকালে শিশু দুটিকে দিয়ে আসবে আর বিকেল ৪টায় নিয়ে আসবে। শিশুদের সব দেখভাল ডে কেয়ার সেন্টার করবে। এতে সুবিধা হচ্ছে নিশ্চিন্তে ফিরোজ কাজ করতে পারবে। তার আয় বন্ধ থাকবে না আবার বিকেলে সন্তানদের নিয়ে নিজের কাছে রাখবেন।

তিনি বলেন, ৬ বছর পর্যন্ত ডে কেয়ার সেন্টারে সরকারি তত্ত্বাবধায়নে থাকবে। এরপর শেখ রাসেল শিশু পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে থাকবে। সেখানে লেখাপড়া, প্রশিক্ষণ, থাকা-খাওয়া অর্থাৎ সবকিছুই সরকারি উদ্যোগে করা হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে এ পরিবারকে সহায়তার জন্য খোঁজ নিতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলামের নির্দেশে কাউনিয়া থানা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান এবং অসহায় পরিবারটির খোঁজখবর নেন।

কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পুলিশ কমিশনার স্যারের নির্দেশে আমরা ফিরোজের খোঁজ খবর নিয়েছি, কথা বলেছি। আশাকরি তার সমস্যার সমাধান করা হবে।  

উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই ‘দুই সন্তানকে বাসায় তালাবদ্ধ করে রিকশা চালাতে যান বাবা’ এ শিরোনামে রিকশাচালক রনি সিকদার ফিরোজ ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করা হয়। এরপরই জেলা প্রশাসন, সমাজসেবা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হলো।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক