বিচ্ছিন্ন বান্দরবান

সংগৃহীত ছবি

বিচ্ছিন্ন বান্দরবান

অনলাইন ডেস্ক

প্রবল বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে পার্বত্য জেলা বান্দরবান। রাঙামাটি ও চট্টগ্রামের সঙ্গে এই জেলার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা বর্ষণে বেড়েছে সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর পানি। প্লাবিত হয়েছে হোটেল–রিসোর্ট।

সেখানে আটকা পড়েছেন অনেক পর্যটক। এদিকে, বান্দরবান জেলায় সোমবার ও মঙ্গলবার ভূমিধসে মা ও মেয়েসহ তিনজন নিহত ও আহত হয়েছেন ৬ জন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে লামা উপজেলার কুমারীতে বাড়ির ওপর মাটির টুকরো ধসে নুরুল ইসলাম (৩৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬ জন।

আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, সোমবার (৭ আগস্ট) বিকালে জেলার সদর উপজেলার গোদাপাড়ায় ভূমিধসে নুরুন্নাহার (৩৫) ও তার মেয়ে সাবেকুন্নাহার (১২) নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র বলছে, বান্দরবানে এমন প্রবল বর্ষা এর আগে খুব কমই দেখা গেছে। অনেক জায়গায় সড়কে উপড়ে পড়েছে গাছ। দুর্গত এলাকার অনেক মানুষই ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। বেশির ভাগ এলাকা বিদ্যুৎহীন। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল। বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে, বন্যা পরিস্থিতিতে তলিয়ে গেছে হাজারো ঘরবাড়ি। পানিবন্দি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে ঠাঁই নিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে। ৮ থেকে ১০ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে লামা বাজার। পানি ঢুকে গেছে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে বিধস্ত হয়েছে অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি।

লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তফা জাবেদ কায়সার জানিয়েছেন, আলীকদম–লামা হয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া পর্যন্ত সড়কে বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ফলে ওইসব এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শহর থেকে চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ির পথে কোনো যানবাহন চলছে না। রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ির পথেও যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় আসা ছবিতে দেখা গেছে, জেলা শহরের অনেক ভবনের প্রায় এক তলা পানিতে ডুবে আছে। পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে হাঁটু পানি। পৌরসভার কালাঘাটা গোধার পাড় এলাকায় সোমবার (৭ আগস্ট) দুপুরে পাহাড় ধসে মা-মেয়ের মৃত্যুর খবরও শোনা গেছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তাসলিমা সিদ্দিকা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলায় দুই শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৪৬টি, লামায় ৫৫টি, নাইক্ষ্যংছড়িতে ৪৫টি, রুমায় ২১টি, রোয়াংছড়িতে ১৯টি, আলীকদমে ১৫টি, থানচিতে ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে জেলার প্রধান দুই নদী সাঙ্গু ও মাতামুহুরী। সোমবার (৭ আগস্ট) ২৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
News24bd.tv/AA