যমুনার পানি বাড়ায় বেড়েছে ভাঙন

যমুনার পানি বাড়ায় বেড়েছে ভাঙন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদী ও খাল-বিলেও পানি বাড়তে শুরু করেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ১৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনা নদীর অরক্ষিত অঞ্চল চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।

মাত্র দুদিনের ব্যবধানে চৌহালী ও এনায়েতপুর অন্তত দেড় শতাধিক বসতভিটা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি সরিয়ে অন্যত্র  স্তুপ করে রেখে অনেক পরিবার খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে। এছাড়াও পানি বাড়ায় চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চলের বসতভিটায় পানি উঠেছে।

রাস্তায় পানি ওঠায় নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে।

এনায়েতপুরের আড়কান্দি গ্রামের সমশের আলী জানান, যমুনা নদী আমাদের সবকিছু গিলে খেয়েছে। যমুনা নদী আমাদের ফকিরের খাতায় নাম লিখেছে। কারো কাছে হাত পাততেও পারি না, কাউকে বলতেও পারি না-এমন অবস্থায় চরম অভাবের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছি।

চৌহালীর ভুতের দিয়ার এলাকার আব্দুল মালেক জানান, চোখের সামনে বাপ-দাদার ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে গেল। এখন জন্মস্থান ছেড়ে অন্য জেলায় চলে যেতে হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি ব্যবস্থাগ্রহণ করতো তবে এরকম হতো না।

বয়োবৃদ্ধ রহিমা খাতুন জানান, কখনো কল্পনাও করি নাই স্বামীর ভিটে ছেড়ে শুন্য হাতে অন্যত্র চলে যেতে হবে। আল্লাহ ছাড়া আমাদের দেখার মতো কেউ নেই। খোলা আকাশের নীচে থাকতে হবে। এতো কষ্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না।

চৌহালীর সাংবাদিক হাসান মাহমুদ জানান, গত দুই দিনে চৌহালীর ভুতের মোড় এলাকায় শতাধিক বসতভিটা ও দোকানঘর বিলীণ হয়ে গেছে। নদী পাড়ে মানুষের মধ্যে আহাজারি শুরু হয়েছে। সকলেই করালগ্রাসী যমুনার কবল থেকে ঘরের চালা ও আসবাব পত্র সরাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। কোথায় যাবে? কি করে খাবে এ দুশ্চিন্তা তাদের কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান জানান, কয়েকদিন ধরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আরও ২/৩ দিন পানি বাড়বে। এর মধ্যে পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করতে পারে। ভাঙ্গনের বিষয় জানান, জিওব্যাগ ফেলে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
 

এই রকম আরও টপিক