৩১ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় নৌকায় চড়ে!

সংগৃহীত ছবি

৩১ লাখ টাকার সেতুতে উঠতে হয় নৌকায় চড়ে!

অনলাইন ডেস্ক

দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় অকেজো হয়ে পড়ে আছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বালুইগাছা এলাকার বাঁশগাদা খালের ওপর ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি সেতু। সেতুতে উঠতে হয় সাঁতরে অথবা নৌকায় চড়ে। ফলে সেতুটির সুফল ভোগ করতে পারছেন না স্থানীয় এলাকাবাসী।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বালুইগাছা এলাকার বাঁশগাদা খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিস। তবে সেতুটির দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় সরকারের অবকাঠামো উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয় জনসাধারণ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বালুইগাছা বাঁশগাদা খালের ওপর নির্মিত সেতুটির চারপাশে অথই পানি। তবে অস্তিত্ব নেই দুই পাশের সংযোগ সড়কের।

বিলের মাঝে খাঁড়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা সেতুটি পার হতে চাইলে ব্যবহার করতে হয় নৌকা। অথবা সাঁতরে গিয়ে সেতুর উপরে উঠতে হয়। যদিও সেতুটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল পানি নিষ্কাশন ও গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়ন করা। তবে এ ধরনের কোনো সুবিধাই পাচ্ছেন না ওই এলাকার স্থানীয় জনসাধারণ।

বেতনা নদীর বেঁড়িবাধ থেকে বালুইগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কারের মাধ্যমে সেতুর সঙ্গে সংযোগের দাবি স্থানীয়দের। তাহলেই সেতুটির সুফল পাবেন এই জনপদের মানুষ। যদি এই এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা না হয় সেক্ষেত্রে প্রায় ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা সেতুটি নিছক রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বালুইগাছা গ্রামের জামসেদ হোসেন বলেন, সেতুটি কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই নির্মাণ করা হয়। যে কারণে সেতুর কোনো সুফল এখানকার লোকজন ভোগ করতে পারছে না। এটা নিছক সরকারি অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। যদি সেতু পার হতে চান সেক্ষেত্রে নৌকা দিয়ে কিংবা সাঁতার কেটে এসে তারপর পার হতে হবে। এটা সত্যিই হাস্যকর।

তিনি আরও বলেন, এই পাশ দিয়ে প্রতিদিন অনেক স্কুলশিক্ষার্থী নিয়মিত পারাপার হয়। ফলে সেতুটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। শুকনা মৌসুমে কষ্ট করে টুকটাক চলাফেরা সম্ভব হলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সকলকে। এত টাকা দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হলেও সেটি স্থানীয় জনসাধারণের কোনো উপকারে আসছে না।

n24bd
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ইয়ারুল হক বলেন, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে সেতুর সুফল ভোগ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে দুইপাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ হলে সেতুটির সুফল আরও বেড়ে যাবে।

তিনি আরও জানান, ব্রিজের দুইপাশে চলাচলের জায়গাটি মাটি দ্বারা ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। বৃষ্টির মৌসুম গেলে কাজটি শুরু করা হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, সেতুটি স্থানীয় বাসিন্দাদের উপকারে আসছে না বিষয়টা এমন নয়, সেখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে পাশাপাশি দু’পাশের সংযোগ সড়কও রয়েছে। সেক্ষেত্রে যেটা করতে হবে দু’পাশের রাস্তাটা চলাচল উপযোগী করে দিতে হবে। তারপর সেটার পুরোপুরি সুবিধা পাবে বাসিন্দারা।

news24bd.tv/A