জামিনে বেরিয়ে চেয়ারম্যানের হুমকি ‘৭ তারিখের পরে প্রতিশোধ নেব’

বদরখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা।

জামিনে বেরিয়ে চেয়ারম্যানের হুমকি ‘৭ তারিখের পরে প্রতিশোধ নেব’

বরগুনা প্রতিনিধি

সরকার পতন আন্দোলনে নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে বেরিয়ে নৌকা মার্কায় জনসভায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উপর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছেন সদর উপজেলার বদরখালি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজা।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তালতলী উপজেলার তালতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ নৌকা মার্কার জনসভায় বক্তব্যে তিনি এ হুমকি দেন। এসময় মঞ্চে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপস্থিত ছিলেন।

মতিউর রহমান রাজা বক্তব্যে বলেন, আমি শম্ভুদার পক্ষ নিয়ে গৌরীচন্নার জনসভায় বক্তৃতা দেয়ার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাকে গ্রেপ্তার করিয়েছে আমার বাড়ির সামনে থেকে।

জানি না তার কত বড় হাত। আমার নেতা আমাকে জামিন করিয়েছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। বলেছে তুমি ভয় পেও না, নির্বাচন চালিয়ে যাও। কে কি পারেন, কে কি পারেন না জানা আছে, গোলাম সরোয়ার টুকু সাহেব, খলিল ভাই, ফোরকান ভাই, তার সাথে শম্ভুদার তুলনা নাই।

এরপর তিনি ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান স্বপন শরীফকে উদ্দেশ্য করে বলেন, 'আমি যখন একা ছিলাম চেয়ারম্যান হিসেবে তখন একা যুদ্ধ করে, তখন আপনারা বড় বড় নেতা নিয়াও আমার সাথে যুদ্ধ করেছেন। আজকে যখন আমার মাথার উপর একটি ছাদ (ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) দাঁড়িয়েছেন, তখন আবার হুমকি দেয়া শুরু করেছেন। আপনি তো জানেন না, এ হাত কত লম্বা, এ ছাদের হাত অনেক বড় লম্বা। আমাকে তো দূরের কথা, কোনো সাধারণ মানুষকেও ভয় দেখালে ৭ তারিখের পরে আমি আমার নেতার নেতৃত্বে প্রতিশোধ নেব। '

মতিউর রহমান রাজা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। গত ইউপি নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। তিনি জেলা বিএনপির (নজরুল-হালিম কমিটি) সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন।

ওই জনসভায় বক্তব্যে নৌকার প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু রাজা প্রসঙ্গে বক্তব্যে বলেন, সাতমাস আগে রাজা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে। তবে বিষয়টি কাউকে সে জানায়নি। গোপন রাখা হয়েছিল।

এর আগে গত রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নে গৌরিচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নৌকা প্রতীকের জনসভায় বক্তব্য দিয়ে ভোট চান এই ইউপি চেয়ারম্যান। পরদিন সোমবার এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে রাজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে মামলায় নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে করা পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার বরগুনা-১ আসনের নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু নিজেই আদালতে জামিন আবেদন করে নিজের জিম্মায় পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিনে আনেন।

নভেম্বরে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সদর থানায় দুটি মামলা করে। নাশকতা সৃষ্টির মামলায় মতিউর রহমান রাজা এজাহারভুক্ত আসামি।

নৌকার জনসভা মঞ্চ থেকে বক্তব্যে হুমকি দেয়া প্রসঙ্গে মতিউর রহমান রাজার মুঠোফোনে কল করা হলেও রিসিভ করেননি।

ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বক্তব্যে, রাজা এখন আমাদের লোক। নাশকতা চেষ্টা মামলা আসামী হওয়ার বিষয়টি আমরা জানতাম না। তাকে মামলা থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।

news24bd.tv/FA