রাশিয়ায় আইএসকে’র হামলার নেপথ্য কারণ 

আইএসকে’র পতাকা ও একজন যোদ্ধা

রাশিয়ায় আইএসকে’র হামলার নেপথ্য কারণ 

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় গতকাল শুক্রবার রাতে কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলায় হতাহত হওয়ার ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ঘটনার পরপর নিজস্ব টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া এক পোস্টে আইএসের পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।  যদিও আইএসের ওই পোস্ট স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
রয়টার্স একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে কেন হামলা করতে পারে রাশিয়ায় আইএস- এ বিষয়ে।

কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে:
ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, রাশিয়াকে মুসলিমবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা একটি দেশ হিসেবে দেখে থাকে আইএস-কে। কারণ রাশিয়া একসময় সমাজতান্ত্রিক দেশ ছিল। সেই রাষ্ট্রব্যবস্থার পতন ঘটলেও আদর্শিকভাবে পুতিন এখনও সেই আদর্শ লালন করেন বলে মনে করে আইএসকে।  
আইএসকে হচ্ছে ইরান, তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত খোরাসান অঞ্চলে (পুরোনো নাম) সক্রিয় থাকা একটি গোষ্ঠী ‘ইসলামিক স্টেট খোরাসান’ বা আইএস-কে।
আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের সবচেয়ে সক্রিয় আঞ্চলিক সহযোগীর একটি আইএস-কে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সোফান সেন্টারের কলিন ক্লার্ক বলেন, ‘দুই বছর ধরেই রাশিয়াকে নিশানা করেছে আইএস-কে। কারণ আইএসকে মনে করে রাশিয়া একসময় আফগানিস্তানকে নিজেদের কুক্ষিগত করতে চেয়েছে। তুর্কমেনিস্তানের স্বাধীনতার ব্যাপারেও রাশিয়া বিরুদ্ধাচারণ করেছিল। সবশেষ, ইরানের সঙ্গেও ভাল যাচ্ছে না রাশিয়ার সম্পর্ক।  

রয়টার্সের ২০২২সালের এপ্রিলে করা একটি প্রতিবেদন মতে, যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে প্রথম কোনো কোম্পানি হিসেবে আইএসকে আর্থিক সহায়তার অভিযোগ স্বীকার করেছিল লাফার্জ। এ ছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে প্যারিসে মামলা চলছে। অভিযোগ, ২০১১ সালে সিরিয়ায় সংঘাত শুরু হওয়ার পরও দেশটিতে একটি কারখানা চালু রেখেছিল লাফার্জ। তবে মানবতাবিরোধী অভিযোগ অস্বীকার করেছে কোম্পানিটি।
২০১৭ সালে লাফার্জের বিরুদ্ধের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে ফ্রান্সের একাধিক অধিকার গোষ্ঠী। তারা জানায়, ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসসহ সিরিয়ার বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ ডলার অর্থসহায়তা দেয় ফরাসি কোম্পানিটি। এরপর কোম্পানিটির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার । ধারণা করা হচ্ছে পুতিনের নতুন করে ক্ষমতায় আসাটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে অনেক দেশ। ফ্রান্স তো রাশিয়ার বিপক্ষে রয়েছেই। তাই ফরাসি এ কোম্পানি লাফার্জ আইএসকে সহয়তা ও উস্কানি দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।  
উইলসন সেন্টারের মাইকেল কুগেলম্যান মনে করেন, আইএসকে রাশিয়া বিরোধী যেমন যুক্তরাষ্ট্রও বিরোধী। তারা মুসলিম দেশগুলোর বন্ধু হিসেবে ঘোষণা দেয় ঠিকই কিন্তু ইরান, আফগানিস্তানেও নিকট অতীতে হামলা চালিয়ে অসংখ্য মানুষ হত্যা করে এর দায় স্বীকার করেছে। ফলে এ সংগঠন আদৌ কি চায় তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।  

news24bd.tv/ডিডি

এই রকম আরও টপিক