যে কারণে চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড তাপমাত্রা

তাপমাত্রা

যে কারণে চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড তাপমাত্রা

অনলাইন ডেস্ক

চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা থাকা এ জেলার জন্য স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।  
২০১৪ সালের ২১ মে এই জেলার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। কয়েকটি করণে এ জেলার তাপমাত্রা এত বেশি।

 

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ভৌগোলিক কারণে সাধারণত চুয়াডাঙ্গায় গরমে তাপমাত্রা বেশি থাকে। আর শীতের সময় তাপমাত্রা কম থাকে। যার ফলে গরমের সময় যেমন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, তেমনি শীতের সময় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এই জেলায়।

তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বিস্তৃত সমভূমি রয়েছে।

এছাড়া এই অঞ্চলের পশ্চিমে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গ। সেখানেও বিশাল এলাকাজুড়ে সমভূমি। আর সমভূমি হওয়ার কারণে এই অঞ্চল দিয়ে পরিবহন পদ্ধতিতে তাপ প্রবাহিত হয় ও বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত থাকে। যার ফলে সরাসরি তাপ লাগার কারণে পুরো অঞ্চলের তাপমাত্রা বেশি থাকে। এছাড়া বাংলাদেশে মার্চ, এপ্রিল ও মে এই তিন মাসে সূর্য লম্বভাবে রশ্মি বা কিরণ দেয়। ফলে প্রচুর গরম অনুভূত হয়। আর তাপের পরিবহন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পশ্চিমা বায়ু চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ গরম লু-বাতাস যখন চুয়াডাঙ্গার প্রবেশদ্বার দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এ জেলার তাপমাত্রা অন্যান্য এলাকার চেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বেশি থাকে।

তাপমাত্রার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের মাঝ বরাবর অতিক্রম করেছে কর্কটক্রান্তি রেখা। সূর্য থেকে চুয়াডাঙ্গার অবস্থান বা সোলার পজিশন ঠিক এই কর্কটক্রান্তি রেখার নিচে। সূর্যের উত্তরায়ণের কারণে তাপমাত্রা বাড়ে। অন্যভাবে বলতে গেলে, এপ্রিল মাসে সূর্য থেকে বাংলাদেশের অবস্থান অন্য সময়ের তুলনায় সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে। যার কারণে সূর্যের তাপ বেশি পড়ে এই অঞ্চলে।

চুয়াডাঙ্গার আশেপাশে বড় কোনো জলাভূমি বা বনভূমি না থাকায় এ অঞ্চলে তীব্র গরম অনুভূত হয়। কারণ কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা নির্ভর করে ওই এলাকার ভূ-প্রকৃতি, সমুদ্র থেকে দূরত্ব, স্থলভাগ ও জলভাগের অবস্থান, বনভূমির অবস্থান ইত্যাদি নানা বিষয়ের ওপরে।

সর্বশেষ কারণ হলো চুয়াডাঙ্গাতে অতীতের তুলনায় গাছ-পালা কমে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে বনাঞ্চল সাবাড় করা হচ্ছে। এছাড়া নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় গাছপালা কমে যাওয়ায় মূলত উষ্ণতা বাড়ছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াও অন্যতম কারণ। আর গরমের সময় জলাভূমির স্বল্পতার জন্য আদ্রতা ধরে রাখা যায় না। তাই বেশি গরম অনুভূত হয়।
news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক