রোগীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ, পেট ফুলে প্রসূতির মৃত্যু

রোগীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ, পেট ফুলে প্রসূতির মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক

অবশেষে ভুল চিকিৎসায় মারা গেলেন প্রসূতি মা নাসিমা বেগম। সিজারিয়ান অপারেশন করার পর পেটের ভেতরে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেয় প্রাইভেট হাসাপাতালের চিকিৎসক।

পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করার পর রোববার রাতে মারা যান প্রসূতি।

রোগীর স্বজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৫ নভেম্বর রংপুর নগরীর মীরগজ্ঞ তামফাট এলাকার রাশেদুল ইসলামের স্ত্রী নাসিমা বেগম নগরীর ধাপ এলাকায় অবস্থিত রোজ প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হয়।

ওইদিনই তার সিজারিয়ান অপরারেশন করা হয় এবং একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন। অপরাশেন করার পর নাসিমা বেগমের পেটের ভেতরে গজ-ব্যান্ডেজ রেখেই সেলাই করে দেওয়া হয়।  

হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়ার পর তার পেট ফুলে যায়। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করার পর ১২ নভেম্বর রোজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে ভর্তি না করে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়।

বাসায় চলে আসার পর ফের তীব্র ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে নাসিমা বেগমকে ১৫ নভেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আলট্রা-সনোগ্রাম করার পর পেটের ভেতরে গজ-ব্যান্ডেজ ধরা পড়ে।

রোববার বিকেলে তার পেটে অপরারেশন করে গজ-ব্যান্ডেজ বের করেন চিকিৎসকরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যায় নাসিমা বেগম।
 
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জিকাল ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. স্বপন জানান, প্রসূতির অপারেশন করে পেটের ভেতরে গজ-ব্যান্ডেজসহ আরও কিছু জিনিসপত্র পাওয়া যায়। রোগীর অবস্থা এমনিতেই গুরুতর ছিল। তার পেট ফুলে গিয়েছিল। ভেতরে রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোগীকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

রোজ প্রাইভেট হাসপাতালের ম্যানেজার মিলন সিজারিয়ান অপারেশন করার কথা স্বীকার করে বলেন, রোগীর পেটে পুঁজ হয়ে ইনফেকশন হয়েছিল।  

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব বর্ম্মন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রাইভেট হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যব্স্থা নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১৭ দিনে রংপুরের ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল অপারেশনে আটজন মা ও নবজাতক মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ভর কুমার রায়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)