‘‌আম্পান’ ঢুকে পড়েছে ৬০০ কি.মিটারের মধ্যে, ঝুঁকিতে সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার সুন্দরবণ সংলগ্ন ব-দ্বীপ গাবুরা থেকে উপকূলবাসীকে আশ্রয়কেন্দ্র নিচ্ছে পুলিশ

‘‌আম্পান’ ঢুকে পড়েছে ৬০০ কি.মিটারের মধ্যে, ঝুঁকিতে সাতক্ষীরা

শাকিলা ইসলাম জুঁই, সাতক্ষীরা

বাংলাদেশের সাতক্ষীরার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আঘাত আনার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার ভোর রাত থেকে সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবণ সংলগ্ন উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আছড়ে পড়বে। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রতি ঘণ্টায় ২২৫-২৪৫ কিলোমিটার গতিবেধে ধেয়ে আসছে।

ফলে চরম উৎকন্ঠায় রয়েছে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার উপকূলীয় মানুষ।

ইতিমধ্যে প্রবল বৃষ্টি ও  ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়াসহ সুন্দরবন সংলগ্ন সকল নদ-নদীর পানি ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্বি পেয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, বুধবার ভোররাত থেকে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড়টি। তখন গতিবেগ থাকবে প্রতি ঘণ্টায় ১৫০-১৬০ কিলোমিটার।

ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে উপকূলে ৫-১০ ফিট উচ্চতার জ্বলোচ্ছাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইতিমধ্যে শ্যামনগর উপজেলার ব-দ্বীপ গাবুরা ও পদ্দপুকুর, মুন্সিগঞ্জ, ভেটখালি ও আশাশুনির প্রতাপনগর সহ আশপাশের ইউনিয়ন থেকে উপকূলবাসীকে নিরাপদ দূরুত্বে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র ও সাইক্লোন সেল্টারে নিয়ে আসা হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে সর্তকতা জারিকরে নিরাপদ দূরুত্বে আশ্রয় নিতে মাইকিং করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলায় ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সকল ধরণের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ১৪৭টি সাইক্লোন শেল্টারসহ ১৭০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ.ন.ম আবুজর গিফারী জানান, উপকূলীয় এলাকা থেকে ইতোমধ্যে দুই হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার ৬০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকরা একযোগে কাজ করছে। মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ও সচেতনতার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরাত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে। উপজেলা মোট ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

উপকূলীয় আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা বলেন, বর্তমান পর্যন্ত দুই হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। উপজেলাব্যাপী ১০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সামাজিক দূরাত্ব বজায় রাখার জন্য সকল মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র নেওয়া সম্ভব নয়। আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও আশপাশেল ভালো পাকা বাড়িতে এসব মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হচ্ছে।

ছবির ক্যাপশন : সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবণ সংলগ্ন ব-দ্বীপ গাবুরা থেকে উপকূলবাসীকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে আসছে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর