দুপুর পেরিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের নানা রকম খবর পাচিছ । নিজের ভেতরেই এক ধরেনের আগ্রহ পাচ্ছি । শীতের দিনে ভোট।
যে সব পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে, তার বেশিরভাগই গ্রামাঞ্চল। গাছ আছে, ফসলের মাঠ আছে, শীতে মোড়া কুয়াশায় ঢাকা অলস আরামদায়ক সকালও সেখানে ছিলো। তারপরো অনেক পৌরসভায় ভোটারের কমতি হয়নি।এর কারণ রাজনীতি কী না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে।
মেয়র পদে ভোট হচ্ছে দলীয় প্রতীকে। প্রতিযোগিতা সেখানে প্রবল। এই নির্বাচনে অংশগ্রহন করে বিএনপি প্রশংসা পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অংশগ্রহন প্রমাণ করে বিএনপি গণতান্ত্রিক রাজনীতির মূল ধারায় থাকার চেষ্টা করছে। যদিও নির্বাচনে অংশগ্রহন নিয়ে বিএনপির একটি মুখস্ত কথা আছে।
পিতৃহারা হলেন পান্ডিয়া ভাতৃদ্বয়
নিজের মেয়ের নগ্ন ছবি দেখিয়ে প্রলোভন, ৩৫ বছরের জেল
চিরযৌবনা হতে কুকুরের মুত্রপান তরুণীর!
সেটি হলো, ‘আন্দোলনের অংশ হিসাবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ’ অর্থাৎ বিএনপি মনে করে সরকার সব নির্বাচনে কারচুপি করবে, তারা সে সব কারচুপি জনতার সামনে তুলে ধরবে এবং সরকারের বিরুদ্ধে এক ধরনের জনমত গড়ে তুলবে। এটা বিশ্লেষকরা অভিহিত করেছেন এক ধরনের রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে। এর উল্টো যুক্তি আ্ওয়ামী লীগ নেতাদের মুখস্ত হয়ে আছে। তারা মনে করেন, বিএনপি আসলে নির্বাচন করতে চায় না। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য লড়াইয়ের আগে হেরে বসে থাকে।
যাহোক, এই পৌরসভা নির্বাচনেও অনিয়ম ও ভোট কারচুপির অভিযোগে বিভিন্ন স্থানে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির বেশ কয়েকজন প্রার্থী। তারপরো ৬০ পৌরসভার বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে বলে গণমাধ্যম জানিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তীব্র ঠাণ্ডা আর কুয়াশা উপেক্ষা করেই ভোট দিতে গেছেন মানুষ।
৬০ পৌরসভার নির্বাচনের মধ্যে তারকাচিহ্নিত নির্বাচনী এলাকা বলা যাবে নোয়াখালীর বসুরহাটকে। সেখানে লড়ছেন আওয়ামী লগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মির্জা কাদের। তিনি আমেরিকায় গিয়েছিলেন চিকিৎসা করাতে । সেখানে তিনি নাকি মনস্থির করেছেন সব সময় সত্য কথা বলবেন। সাংবাদিকরা এর নাম দিয়েছে সত্যবচন। এই সত্যবচনে তিনি এমন সব কথা বলছেন, যার তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতারই মনমত হয়নি। তাদের কেউ কেউ বলছেন, বড় দলে সমালোচনা থাকবে, কিন্তু সব অভিযোগ প্রকাশ্য কেন হবে। কিছু অভিযোগ দলের ভেতরে ভেতরে মীমাংসা করে নিতে হয়।
যাহোক, সেই রাজনীতির কথায় যাচ্ছি না। স্থানীয় সরকারের একটা নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির মতো মনযোগের কেন্দ্রে আনতে পারা সহজ কথা নয়। কঠিন সেই কাজটি মির্জা কাদের করেছেন। এমনকী ভোটের সকালে তিনি জানিয়েছেন, হাই কমান্ড বলেছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। জয়ের বিষয়ে তিনি আশাবাদী। তবে হেরে গেলে বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যেতে প্রস্তুত আছেন।
আমি মনে করি সব প্রার্থীর ভেতরেই এই মনোভাব থাকা দরকার। জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ও পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা নিশ্চয়ই নির্বাচনকে সহিংসতামুক্ত রাখতে সহায়তা করে।
নির্বাচনের জয় হোক। গণতন্ত্রের জয় হোক।
আনোয়ার সাদী: সিনিয়র নিউজ এডিটর, নিউজ টোয়েন্টিফোর।