নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৪তম জন্মদিবস ছিলো গতকাল। জন্মদিন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতায় গিয়েছিলেন। কিন্তু, জন্মদিনটি পরিণত হলো পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার লড়াইয়ে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মদিনের উৎসবে বক্তৃতা দিতে অস্বীকার করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ মোদির সামনে।
‘আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানের একটা মর্যাদা থাকে। এটা সরকারি অনুষ্ঠান, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রোগ্রাম নয়। এটা সকল মানুষের, সব রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান। আমি কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রীর কাছে, কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে যে আপনারা কলকাতায় অনুষ্ঠান করেছেন।
এরপরে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, মুখ্যমন্ত্রী যখন বক্তৃতা দিতে ওঠেন, ঠিক সেই সময় ভিড়ের মধ্যে কয়েকজন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। এরই প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
সাধারণভাবে মনে করা হয় ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানটি হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী ও দলগুলোর স্লোগান। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে এই স্লোগান এতই জোরদার ছিল যে সেটি বাইরে থেকেও শোনা যায়।
এ ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতজুড়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, স্মরণকালের মধ্যে কোনো নেতা বা মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বলেননি যে তাঁকে অপমান করা হয়েছে এবং সে জন্য বক্তৃতা দিতে অস্বীকার করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা যেমন হচ্ছে, তেমনি তাঁর সাহসের প্রশংসাও করছেন অনেকে।
১২ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল শুরু
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর ভাষণে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি ভারতের স্বাধীনতার আগে নেতাজির জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে কথা বলেন। মোদি তাঁর বক্তৃতার বেশ কিছু অংশ বাংলায় বলেন। তিনি বলেন, ‘সোনার বাংলাকে আত্মনির্ভর বাংলা বানাতে হবে এবং এই সংকল্প যতক্ষণ না পূর্ণ হবে, থামা চলবে না। ’
‘ভারতের চারটি রাজধানী করা উচিত। শুধু দিল্লিতে রাজধানী থাকবে, এমনটা মেনে নেওয়া যায় না। দিল্লির মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলছি, সংসদের চারটি অধিবেশন চারটি রাজ্যে করা উচিত। চারটি রাজধানীর মধ্যে কলকাতাকে ব্রিটিশ আমলের মতো রাজধানী করা হোক। ’ বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ভারতে কেন্দ্রের ক্ষমতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। রাজ্যের ক্ষমতাও কমে চলেছে। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এ দাবি। এখন দেখতে হবে, অন্য রাজ্যের নেতারা এ প্রসঙ্গে কী বলেন। মমতার এ প্রস্তাবকে বিজেপি কীভাবে ব্যাখ্যা করে, সেটাও দেখার বিষয়।
news24bd.tv আয়শা