প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কমলাপুর স্টেশন ভাঙার অনুমোদন দিল

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কমলাপুর স্টেশন ভাঙার অনুমোদন দিল

অনলাইন ডেস্ক

গত কয়েক মাস ধরে কমলাপুর রেল স্টেশন ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলছে আলোচনায় সমালোচনা। সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এর প্রতিবাদ করে আসছিলো সাধারণ মানুষ ও নগর পরিকল্পনাবিদরা। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। বর্তমান কাঠামো ঠিক রেখে মাল্টিমোডাল হাব ও মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে কমলাপুর স্টেশনটি ভেঙে আরও উত্তরে নতুন করে নির্মাণে সম্মতি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে এক সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, ‘কমলাপুর স্টেশন বিল্ডিংয়ের আগে এমআরটি লাইন-৬-এর সিজর ক্রসিংয়ের স্থান সংকুলান করার জন্য এমআরটি-৬ (ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট) লাইনের প্ল্যানে স্টেশন বিল্ডিং উত্তর দিকে স্থানান্তর করা হবে এবং এ বিষয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ডিএমটিসিএল (ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড) সম্মত হয়েছে। ’ গত বছরের ডিসেম্বরে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সভায় প্রকাশ করা হয় সিদ্ধান্তগুলো।

কমলাপুর স্টেশনটি ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা।

এটি গত শতাব্দীর ষাটের দশকের আধুনিক স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যেও অন্যতম। কমলাপুর স্টেশনটি স্থানান্তর করতে গত বছর নভেম্বরে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ একটি নতুন পরিকল্পনায় ঐকমত্যে পৌঁছায়। রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য স্টেশনটি বর্তমান অবস্থান থেকে ১৩০ মিটার উত্তরে সরিয়ে নিতে হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের এই বৈঠকের পর রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী বর্তমান স্টেশন ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে এবং এর উত্তরে তৈরি করা হবে অনুরূপ একটি স্টেশন। এটি যেহেতু একটি আইকনিক স্থাপনা, তাই ভেঙে ফেলার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন:


পাপুলের এমপিকান্ডে জড়িতদের বিচার চাই

যে আমল করলে বিশ্বনবী হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন

ইউএস বাংলা এখন আতঙ্কের বাহন!

কক্সবাজারে সিএনজি অটোরিকশা মালিককে কুপিয়ে হত্যা


মেট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মিত হবে বলে প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এটি সম্প্রসারণ করে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত নেওয়ার নতুন পরিকল্পনা করা হয়। সম্প্রসারণের ব্যাপারে রেলওয়ের আপত্তি না থাকলেও নতুন ডিজাইনের বিষয়ে আপত্তি জানায় প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তী সময়ে তারা নতুন এই ডিজাইনে সম্মতি প্রদান করে।

১৪ ডিসেম্বর বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে একটি ছিল কমলাপুর মাল্টিমোডাল হাব। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য এ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে তা পাঠানো হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, কমলাপুর স্টেশন বিল্ডিংয়ের আগে এমআরটি লাইন-৬-এর সিজর ক্রসিংয়ের স্থান সংকুলান করার জন্য এমআরটি লাইন-৬-এর প্ল্যানে স্টেশন বিল্ডিং উত্তর দিকে স্থানান্তর করা হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষ প্রকল্প এলাকার সামগ্রিক পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য বিস্তারিত গবেষণা চালানোর জন্য পরামর্শদাতা নিয়োগ দেবে।

কমলাপুর স্টেশনটি ১৯৬৮ সালের ২৭ জুলাই উদ্বোধন করা হয়। বিস্তীর্ণ ধানখেত থেকে জায়গাটিকে রূপান্তর করা হয় এশিয়ার অন্যতম সুন্দর ও আধুনিক রেলওয়ে স্টেশনে। সরকারিভাবে ঢাকা রেলস্টেশন হিসেবে পরিচিত কমলাপুর রেলস্টেশনটি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও বৃহত্তম রেলস্টেশন। এর স্থপতি ড্যানিয়েল ডানহ্যাম ও রবার্ট বুই। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।

news24bd.tv আহমেদ