সমাজে গা বাঁচিয়ে লেখাই সহজ, কোন বার্তা থাকে না, দায়বোধ থাকে না

সমাজে গা বাঁচিয়ে লেখাই সহজ, কোন বার্তা থাকে না, দায়বোধ থাকে না

Other

আমার বেশিরভাগ লেখা (৬০% ফেইসবুক পোস্ট) দেশের শিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে। পৃথিবীর তুলনায় বাংলাদেশ, শিক্ষা ও গবেষণায় কোথায় কিভাবে কতটুকু পিছিয়ে আছে, সেগুলো নিয়ে। এই পিছিয়ে থাকা থেকে কি করে উঠে আসতে পারি, সেইসব দিকনির্দেশনা নিয়ে। আমার যেহেতু ইউরোপ এবং আমেরিকায় শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ হয়েছে—সে অভিজ্ঞতার আলোকে, আমাদের দেশের শিক্ষা-গবেষণার দুর্বল দিকগুলোকে পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে আমি লিখি।

এই লেখাগুলোতেও অনেকে আহত হন। আমি খুব অবাক হই। এতে আহত হওয়ার কি আছে? আমি একটা চলমান সিস্টেমের দুর্বলতা নিয়ে লিখি। একটা পশ্চাৎপদ নিয়ম-নীতি ও ধারার পরিবর্তনের লক্ষ‍্যে লিখি।

ব‍্যক্তিপর্যায়ে কাউকে আঘাতের কোন সামান‍্যতম উদ্দেশ‍্যে নয়। এই ধরণের লেখাগুলোতে অনেকে আমাকে ইনবক্স করে কিংবা কমেন্ট করে। “তাদের অনেকেই বলে—বিদেশ থেকে লেখা সহজ। দেশে এসে শিক্ষক হিসেবে জয়েন করে পরিবর্তন করে দেখান। ” —এটা একধরণের লজিক‍্যাল ফ‍্যালাসি (Logical Fallacie)।

আমি বিদেশে থাকি বলেই যে এগুলো বলতে পারবো না, লিখতে পরবো না, পরামর্শ দিতে পারবো না—এমন কোন কথা নেই। তাছাড়া, আমি দেশে গেলে কি আমাকে ইউজিসির চ‍েয়ারম‍্যান করা হবে? আমাকে কি শিক্ষামন্ত্রী করা হবে? তারচেয়ে বড়ো কথা আমাকে কি স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিবে? দেশে বসেও অনেকেই এসব বিষয়ে লিখছেন। আমি সবার নাম জানি না। সবাইকে চিনি না। অন্তত প্রফেসর কামরুল হাসান মামুনকে (Kamrul Hassan Mamun) চিনি। —তাকেও কি বলবেন, দেশে গিয়ে শিক্ষক হিসেবে জয়েন করে পরিবর্তন করার জন‍্য? —হাস‍্যকর!

কোন পরিবর্তন একদিনে হয় না। বহু জাতি হারিয়ে শিখে। কারণ তাদের দুরদর্শীতা থাকে না। সঠিক নেতৃত্ব থাকে না। তারা অন‍্যকে দেখে শেখে না। দেশের শিক্ষা ও গবেষণা নিয়ে আমার মতামত একদিন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবেই। সেটা আমি জানি। কারণ এই পথগুলোতেই সারা বিশ্ব হেঁটেছে। এগুলো পরীক্ষিত পথ। বাংলাদেশও যদি বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াতে হয় তাহলে তাকেও একই পথে হাঁটতে হবে। কখন সে পথে হাঁটবে, সেটাই দেখার বিষয়। যতো আগে বোধদয় হয়, ততোই ভালো। তারপরও আমি বলবো, যদি আমার লেখা নিয়ে তর্ক করতে চান কোন সমস‍্যা নেই। উদাহরণ দিয়ে, মতামত বিশ্লেষণ করুন। কোন কারণ ছাড়াই যদি ব‍্যক্তিগতভাবে নিয়ে আঘাত প্রাপ্ত হন, তাহলে বিস্মিত হওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই। আমি দেশের জন‍্য বলি। অনাগত প্রজন্মের জন‍্য বলি। পঞ্চাশ-একশো বছরের ভবিষ‍্যতের কথা ভেবে লিখি। আপনাকে আঘাতের জন‍্য নয়।


আরও পড়ুনঃ


গ্রহাণু ঠেকাতে অন্তত পাঁচ বছর সময় লাগবে: নাসা

তাহসান-মিথিলার ‘সারপ্রাইজ’-এর রহস্য উন্মোচন, আড়ালে অন্য কেউ

ইসরায়েলের হামলা নিয়ে নোয়াম চমস্কির টুইট

ইসরায়েলের হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ: মিয়া খলিফা


সমাজে গা বাঁচিয়ে লেখাই সহজ। গা বাঁচিয়ে লেখার মধ‍্যে কোন নির্দেশনা থাকে না। বার্তা থাকে না। কোন দায়বোধ থাকে না। সবসময় মিথ‍্যে মিথ‍্যে আশার কথা বলা সহজ। কঠিন কাজটা হলো গা বাঁচিয়ে না লেখা। গা বাঁচিয়ে না বলা। যে সমাজের বেশিরভাগ মানুষ গা বাঁচিয়ে লেখে বা বলে—সে সমাজ মূলত বুদ্ধিবৃত্তিক বন্ধ‍্যাত্বতায় ভুগে। সে সমাজে নতুন ধারণা, নতুন চিন্তা, পরিবর্তনের ধারা এগুলো স্থবির হয়ে থাকে। সেখানে নতুন আলো সহজে প্রবেশ করে না।

news24bd.tv / নকিব