জ্ঞানের উদ্দেশ্য হলো রিস্ক ফ্যাক্টর কমানো

জ্ঞানের উদ্দেশ্য হলো রিস্ক ফ্যাক্টর কমানো

Other

ইউনিভার্সিটির শুরু থেকেই কয়েকটা বিষয় চর্চা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ:

এক. প্রেজেন্টেশন স্কিল। তুমি কোন সাবজেক্টে পড়ো সেটা বিষয় না, তোমার প্রেজেন্টেশন স্কিল সারা জীবনের সম্পদ। দেশের পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করেও, কখনো একটা প্রেজেন্টেশন দেই নি। আর এখন প্রতি সপ্তাহে একাধিক প্রেজেন্টেশন দিতে হয়।

সাইন্টিফিক রিসার্চে যারা ক‍্যারিয়ার গড়বে, তাদের জন‍্য প্রেজেন্টেশন স্কিল অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। অন‍্যান‍্য ফিল্ডের জন‍্যও।

প্রেজেন্টেশন হলো কমিউনিকেশন স্কিলের একটা অংশ। প্রেজেন্টেশনের মাধ‍্যমে একজন মানুষ তার কাজ, তার সৃষ্টি, তার ভাবনাকে অন‍্যের কাছে তুলে ধরে।

নির্দিষ্ট সময়ে, একটা অডিয়েন্সকে একটা ভালো প্রেজেন্টেশনের মাধ‍্যমে কনভিন্স করা—সহজ কোন বিষয় না। আমেরিকায় অনেক ইন্টারনেশনাল স্টুডেন্ট ভালো জব পায় না, এই প্রেজেন্টেশন স্কিলের অভাবে।

ইউনিভার্সিটির প্রথম বর্ষ থেকে এই স্কিল গড়ে তোলার চেষ্টা করো। নিজে নিজে করো। বন্ধুরা মিলে গ্রুপ করে করো। চর্চা করে যাও। সারা জীবন কাজে আসবে। কাঁচা বয়স থেকে এটার ভিত শক্ত না করলে, পরে গিয়ে ভালো দক্ষতা অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ে। আমি নিজে খুব আফসোস করি, কেন ইউনিভার্সিটির প্রথম বর্ষ থেকে এই দক্ষতা অর্জনের চর্চা করিনি।

দুই. ভাবনার দক্ষতা। এই স্কিলটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই ভাবতে পারি না। মনে হতে পারে আমরা সবাই ভাবি। কিন্তু আসলে সবাই ভাবতে পারে না। এই ভাবনা হলো ক্রিটিক‍্যাল থিংকিং। ইনোভেটিভ থিংকিং। থিংকিং এবাউট নিউ আইডিয়া। —এই স্কিলটা একজন মানুষকে বহুদূর নিয়ে যায়।

দেশে পড়াশুনার করার সময় এই বিষয়টা উপলব্ধি করতে পারিনি। সেভাবে কেউ বলেও নি কখনো। ইনোভেটিভ থিংকিং কতো পাওয়াফুল, সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি বিদেশে আসার পর। তোমার ভিতর যদি ইনোভেটিভ থিংকিং পাওয়ার থাকে, তোমার ক‍্যারিয়ার হবে খুবই শক্তিশালী। যেই এরিয়াতেই কাজ করো না কেন।

ইউনিভার্সিটির শুরু থেকেই এই ধরণের ভাবনার চর্চা করতে হয়। থিংক ডিফরেন্টলি। ভিন্নভাবে ভাবা। ভিন্নভাবে চিন্তা করা। ছোট হোক আর বড়ো হোক, নতুন আইডিয়া নিয়ে ভাবো। এটা একটা চর্চার বিষয়। এই স্কিল সারাজীবনের পুঁজি। যেই দেশেই কাজ করো না কেন।

তিন. ইনভেস্টমেন্ট নলেজ। তুমি কবি হও, লেখক হও, বিজ্ঞানী হও কিংবা কর্পোরেট জব করো—টাকা মানুষের জীবনের অপরিহার্য বিষয়। তাই ইনভেস্টমেন্ট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা—সারাজীবনের জন‍্য পুঁজি। তোমার হাতে টাকা না থাকলেই যে ইনভেস্টমেন্ট নলেজ রাখা যাবে তা কিন্তু না। তুমি তো সারাজীবন অনেক কিছুই পড়ছো, যেটা কোন কাজেই আসে না। পরীক্ষা দিচ্ছো, যেগুলো শুধু পাশের জন‍্য। তাহলে শুধু টাকা থাকলেই ইনভেস্টমেন্ট নিয়ে জানতে হবে—এমন ভাবনার কোন কারন নেই।


আরও পড়ুনঃ


আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেন মেক্সিকান মাদকসম্রাট গুজম্যানের স্ত্রী

২০ দিন আগে আইনজীবী পাত্রীকে দেখে পছন্দ করে রেলমন্ত্রী

অবশেষে প্রকাশ্যে আসলো নুসরাতের বেবি বাম্প, ছবি ভাইরাল

‘গোপন তথ্য ফাঁস করতে চেয়েছিলেন কারাগারে নিহত ইসরাইলি গোয়েন্দা’


দেশে থাকার সময় শুনতাম, মানুষ শেয়ার বাজারে নিঃস্ব হয়েছে। —কেন নিঃস্ব হয়েছে? কারণ, তাদের নব্বইভাগ শুধু অন‍্যের কথা শুনে গিয়ে টাকা ঢালে। শেয়ার মার্কেট কোন ছোটখাটো বিষয় না। এটা নিয়ে শিখেই জীবন পার করে দেয়া যায়। মানুষ যেমন পরীক্ষায় ভালো করার পরও ভালো চাকরি পায় না, তেমনি ইনভেস্টমেন্ট নলেজ থাকার পরও যে তুমি টাকা হারাতে পারো না তা কিন্তু নয়। তবে সম্ভাবনাটা অনেক কমে যায়। জ্ঞানের উদ্দেশ‍্য কি? —জ্ঞানের একটা উদ্দেশ‍্য হলো রিস্ক ফ‍্যাক্টর কমানো। যে যতো জানে, তার রিস্ক ফ‍্যাক্টর ততো কম।

news24bd.tv / নকিব