গাফফার ভাই চমৎকার ভাষায় সুখপাঠ্য লেখার জন্য পাঠকপ্রিয় ছিলেন

মারুফ কামাল খান

গাফফার ভাই চমৎকার ভাষায় সুখপাঠ্য লেখার জন্য পাঠকপ্রিয় ছিলেন

মারুফ কামাল খান

প্রবাসী প্রবীণ সাংবাদিক ও সুপরিচিত আওয়ামী বুদ্ধিজীবী আবদুল গাফফার চৌধুরী দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। সেরে উঠে ফের কলম ধরেছেন। আমি অগ্রজ সাংবাদিক-সাহিত্যিক গাফফার ভাইয়ের দীর্ঘায়ু কামনা করি।

গাফফার ভাই চমৎকার ভাষায় সুখপাঠ্য লেখার জন্য পাঠকপ্রিয় ছিলেন।

কিন্তু তাঁর অতি দলমন্যতার কারণে পাঠক কমতে কমতে তলানিতে পৌঁচেছে। তাঁর তথ্যের সততা ও বিশ্লেষণের ওপর পাঠকের আস্থা খুব সামান্য। তবে কাল্পনিক নানান উদাহরণ এবং কুটিল কুযুক্তি দিয়ে তিনি এখনও কিছু অন্ধ আওয়ামী ভক্ত ধরে রেখেছেন।

বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন তাঁর প্রিয় হাসিনা সরকারের একটি মোক্ষম অর্গ্যানের ওপর মার্কিন স্যাংকশন জারির পর অন্যান্য আওয়ামী পাওয়ার হাউজের মতন গাফফার ভাইয়ের মাথাও বেশ খানিকটা 'আউলাইয়া' গিয়েছে।

তিনি বসুন্ধরা কোম্পানির 'কালেরকণ্ঠ' পত্রিকায় এক কলাম লিখেছেন। সে লেখার হেডিং হচ্ছে: 'হাসিনা সরকারের জন্য উভয়সংকট। '

ঐ কলামে গাফফার ভাই এই স্যাংকশানের জন্য মূল দোষ দিয়েছেন ইন্ডিয়ার ওপর। তাঁর ভাষায়: "আমেরিকা চায় না বাংলাদেশে চীনের প্রভাব বৃদ্ধি পাক। সুতরাং বাংলাদেশের ওপর নানা রকম চাপ দেওয়া হচ্ছে। আসল চাপটা ভারতের। চীনের অর্থনৈতিক শত্রু ভারত। এখন আমেরিকার সঙ্গে হাত মিলিয়ে চীনের রাজনৈতিক শত্রুর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশকে ভারত সরাসরি চাপ দিতে পারছে না। তাই আমেরিকার সাহায্যে এই চাপ প্রদান। "

বড় ভাইজানের এই 'অ্যানালাইসিস' নিয়ে আমি কোনও মন্তব্যই করছি না। দেখা যাক, তাঁর আওয়ামী ভক্তরা এবং প্রিয় হাসিনা সরকার এ বিশ্লেষণ গ্রহন করে কিনা। আর ভারতপ্রিয় বসুন্ধরা কোম্পানির পত্রিকা এ প্রচারণা ছাপলো কেমন করে?

গাফফার ভাই আরও লিখেছেন: "আমেরিকা চায় বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ বশীভূত করতে। সম্প্রতি ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান মিলে যে স্কোয়াড গঠন করা হয়েছে তাতে আজ হোক কাল হোক বাংলাদেশকে ঢুকতে হবে। নইলে আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নত হবে না। "

গাফফার ভাই ইদানিং হালনাগাদ কোনও তথ্যই রাখেন না দেখছি। চার দেশ মিলে যে একটা যুথবদ্ধতার উদ্যোগ ছিল সেটার নামটাও ভুল করেছেন উনি। ওটা 'স্কোয়াড' নয় আসলে 'কোয়াড'। Quadrilateral Security Dialogue বা চতুর্পক্ষীয় নিরাপত্তা সংলাপ - সংক্ষেপে Quad (কোয়াড)। সে উদ্যোগটা পুরোপুরি আকৃতি পাবার আগেই অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেকটাই সক্রিয় একটা প্রতিরক্ষাজোট গঠন করেছে যার নাম AUKUS (অকাস) - ওতে কিন্তু ইন্ডিয়া নাই। অস্ট্রেলিয়ার A, যুক্তরাজ্যের UK এবং যুক্তরাষ্ট্রের US মিলিয়ে AUKUS. কোয়াডের আওতায় চার দেশ যৌথ সমুদ্র মহড়া করা সত্বেও এই জোট গঠনে কোনো ট্রিটি না হওয়ায় এটা এখনও কেবলই সংলাপ পর্যায়েই সীমিত আছে।

আরও পড়ুন:

২০২২ সালে ভিয়েতনামের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে সর্বোচ্চ

মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে জেড পাথরের খনিতে ভূমিধস

কোয়াডকে 'এশিয়ান ন্যাটো' হিসেবে উন্নীত করার কথা এখনো ইচ্ছের পর্যায়েই রয়ে গেছে। তাছাড়া এই সংলাপের আওতা জলবায়ু, ভ্যাক্সিন ও প্রযুক্তি সহায়তার ক্ষেত্রে প্রসারিত করে নিরাপত্তা বিষয়ক ক্ষেত্রে কোয়াড-এর গুরুত্ব কমিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও মনে করা হয়।

(মত ভিন্নমত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/এমি-জান্নাত