রাজীব মীরের মরদেহ ঢাকায়

লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ভারতের চেন্নাইয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাজীব মীর

রাজীব মীরের মরদেহ ঢাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষক মীর মোশাররফ হোসেন ওরফে রাজীব মীরের মরদেহ ভারতের চেন্নাই থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। আজ রোববার সাড়ে ১১ টার দিকে তার মরদেহ শ্রীলংকান একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। সেখান থেকে মরদেহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর রাজীব মীরের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

জানাজা শেষে মরদেহ কিছু সময়ের জন্য টিএসসিতে রাখার কথা রয়েছে। সেখান থেকে নিথর রাজীব মীরকে নিয়ে যাওয়া হবে নিজ জেলা ভোলায়। সেখানে দুটি জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দ্বিতীয় নামাজে জানাজা ২৩ তারিখ সকাল ৯টায় ভোলা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে এবং তৃতীয় নামাজে জানাজা মরহুমের নিজ এলাকা ভোলার পরাণগন্জ হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার সকালে ভোলা সদরের পরানগঞ্জে রাজীব মীরকে দাফন করা হবে।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১.৩৭ মিনিটে ভারতের চেন্নাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

রাজীব মীর ভোলা জেলার কৃতিসন্তান, পরানগঞ্জ হাইস্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মীর মোয়াজ্জেম হোসেন (লালু) এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। তিনি লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিন মাস আগে চিকিৎসার জন্য তিনি চেন্নাই যান। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, দুই মাসের মধ্যে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা না হলে তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।

শিক্ষক রাজীব মীরের চিকিৎসার জন্য প্রায় কোটি টাকার প্রয়োজন ছিল। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীরা মিলে চেষ্টা করছিলেন। প্রয়োজনীয় অর্থ ও লিভার সবই জোগাড় হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অপারেশনের আগে হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। এরপর জানা যায়, তার কিডনিও কাজ করছে না। চিকিৎসকরা আশা ছেড়ে দেন। অবশেষে শুক্রবার দিবাগত রাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রাজীব মীর।

রাজীব মীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বিভাগের চেয়ারপার্সন হিসেবে কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

না ফেরার দেশে রাজীব মীর

স্যার, আমি আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী

অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি একাধারে কবি, লেখক, গবেষক, সমাজকর্মী এবং মানবাধিকার কর্মী হিসেবে আমৃত্যু রাজপথে, প্রতিবাদের মঞ্চে সদা সক্রিয় ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি শিশু কন্যা বিভোর, স্ত্রী, মা, বাবা, দুই বোন এবং অসংখ্য স্বজন, বন্ধু, শিক্ষার্থী, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

রাজীব মীরের বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছে তার পরিবার।

সম্পর্কিত খবর