মাদারীপুরে ‘জয় বাংলা’ উৎসব নিয়ে বিতর্ক

‘জয় বাংলা’ উৎসবের পোস্টার, যেখানে নাম নেই মাদারীপুর জেলার শীর্ষ নেতাদের।

মাদারীপুরে ‘জয় বাংলা’ উৎসব নিয়ে বিতর্ক

বেলাল রিজভী • মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরে আগামীকাল (৩ অক্টোবর, বুধবার) অনুষ্ঠিতব্য ‘জয় বাংলা’ উৎসব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। উৎসবে থেকে বাদ পড়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। ফলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে নেতা-কর্মীদের মাঝে।

এর প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ও লিখিত অভিযোগপত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে সরকারী নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে ‘জয় বাংলা’ উৎসব নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ‘জয় বাংলা উৎসব উদযাপন পরিষদ’ নামে একটি কমিটি। তবে এই অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনো নেতাদের অতিথি করা হয়নি। রাখা হয়নি বর্তমানের কোন দলীয় জনপ্রতিনিধিদের।  

news24bd.tv
অভিযোগপত্রের প্রথম অংশ

এছাড়া অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি মাদারীপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদ আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী, সংরক্ষিত সংসদ সদস্য রোখসানা ইয়াসমিন ছুটিকেও।

 

এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে। ফলে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর ক্ষোভের কথা জানিয়ে অভিযোগ দিয়েছেন।

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র থেকে আরও জানা গেছে, অনুষ্ঠানে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পাভেলুর রহমান শফিক খান এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানানো হয়নি। বরং বিশেষ অতিথি করা হয়েছে বিএনপির সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি থেকে নির্বাচিত পৌর চেয়ারম্যানকে।  
news24bd.tv
অভিযোগপত্রের দ্বিতীয় অংশ

এ ব্যাপারে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির হলেও দুঃখের বিষয় অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপেক্ষিত। কিছু সরকারি আমলা আর বিএনপি ঘরোনার নেতাদের নিয়ে অনুষ্ঠান করার অর্থই হচ্ছে অনুষ্ঠানকে বির্তকিত করা। এই অনুষ্ঠানে নৌকা প্রতীকের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিএনপি নেতাকে অতিথি করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। ’

জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মোল্লা জানান, ‘অনুষ্ঠানটি নৌ পরিবহন মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খানের পৃষ্ঠপোষকতায় হলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের বাদ দিয়ে অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। এতে আমাদের জন্য অপমানের। কারণ আমরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, আমাদের বাদ দেয়াই প্রমাণ করে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে অপদস্ত করা। আমরা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেছি। ’

উল্লেখ্য, আগামীকালের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এছাড়া আরও ৪ জন সরকারি কর্মকর্তা ও কয়েকজন সাবেক জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ অতিথি করা হয়েছে।  

অনুষ্ঠনটি আয়োজন করেছে ‘জয় বাংলা উৎসব উদযাপন কমিটি’ নামে একটি ব্যক্তি নির্ভর সংগঠন। যার আহ্বায়ক নৌ মন্ত্রীর ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান ও সদস্য সচিব সাকিলুর রহমান সোহাগ তালুকদার।


রিজভী▐ অরিন▐ NEWS24 

সম্পর্কিত খবর