‘কাঁটাতারের বেড়া নয়, চীনের প্রাচীর গড়া হবে’

রুহুল কবির রিজভী।

‘কাঁটাতারের বেড়া নয়, চীনের প্রাচীর গড়া হবে’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ অধিকার আদায়ের ঝটিকাকেন্দ্র। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আবারও ছিনিমিনি খেললে কাঁটাতারের বেড়া নয়, চীনের প্রাচীরের ন্যায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। বিএনপি একতরফা ভাগাভাগির নির্বাচনকে কেবল প্রত্যাখান নয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধের ধাক্কায় গুড়িয়ে দেবে।

বোরবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।


 
‘আওয়ামী লীগ মিথ্যা চিৎকারসর্বস্ব দল’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, পিঠা ভাগের মতো সংসদীয় আসনের সিংহভাগ আওয়ামী লীগ নিজেদের কব্জায় রেখে বাকি স্বল্পসংখ্যক আসন অন্যদলকে ভাগ দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। এটাই নির্বাচনহীন একদলীয় শাসনের নমুনা। ওবায়দুল কাদেরের কথায় যে ‘আনুষ্ঠানিকতা’র কথা বলা হয়েছে সেটা কী তারই আলামত? আসন ভাগাভাগির বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে।

তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, যতই ষড়যন্ত্র করেন না কেন, যতই ভাগাভাগি করেন না কেন, বানরের পিঠা ভাগাভাগির নির্বাচন এদেশের জনগণ হতে দেবে না।

৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন আর এদেশে করতে দেওয়া হবে না। জনগণকে সাথে প্রতিরোধের ধাক্কায় গুড়িয়ে দেওয়া হবে।
 
নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবংঅর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো শঙ্কা নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উন্নয়ন দিয়েই দেশবাসীর মন জয় করেছে দল। তাই আগামী নির্বাচন কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তার অধীনে অনুষ্ঠিত হবে।  

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার বিদ্যা ভাল করেই জানে। আওয়ামী লীগ আত্মসম্মানহীন প্রতারক, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করাই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইশতেহার। আওয়ামী লীগ নেতাদের কথায় মনে হচ্ছে তাদের মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত। কীভাবে আরেকটি ভোটারবিহীন নির্বাচন মঞ্চস্থ করা যায় সেই চক্রান্তমূলক আয়োজনে তারা ব্যস্ত রয়েছেন। সাজানো জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ তৈরি করে মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে রাখা ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেয়া সেই মাস্টারপ্ল্যানেরই অংশ।
 
রিজভী বলেন, পুলিশী ক্ষমতার অহঙ্কার ও গরিমায় প্রধানমন্ত্রী সর্বময় কর্তৃত্ব চাইছেন, কিন্তু সেই স্বপ্ন গণতন্ত্রকামী জনগণ বাস্তবায়িত হতে দেবে না। এদেশের বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষা এবং জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হতে দেবে না এদেশের জনগণ।

তিনি বলেন, বিএনপি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে যে নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন বেগম খালেদা জিয়া। নির্বাচন হতে হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে।
 
জনতার প্রতিরোধে আওয়ামী নেতাদের সকল ষড়যন্ত্র ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে আশা করে তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনকে নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা প্রতিহত করতে, আবারও লুটেরা সরকার কায়েমের বিরুদ্ধে জনগণ জেগে ওঠেছে। যেভাবে দেশের আর্থিক খাতকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে, শেয়ার বাজার লুট করা হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থা যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, সারাদেশে লুটপাটের যে আনন্দমেলা চলছে, সড়কের বেহাল দশায় প্রতিদিন যেভাবে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে তাতে উন্নয়নের খোলস ছিঁড়ে কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে। নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে, গুম, খুন, ক্রসফায়ারে নির্বিচারে মানুষ হত্যার মাধ্যমে দেশে যে আতঙ্কিত পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যেভাবে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের দ্বারা নারীশিশু নির্যাতনসহ মানুষের ঘরবাড়ি, ভিটা বেদখল চলছে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চলমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ এখন ফুঁসে উঠেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর