বাপ-ছেলের প্রতারণায় সৌদিতে বিপাকে শতশত বাংলাদেশি

রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ

বাপ-ছেলের প্রতারণায় সৌদিতে বিপাকে শতশত বাংলাদেশি

মোহাম্মদ আল-আমীন• সৌদি আরব প্রতিনিধি

কুমিল্লা জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের মান্দুয়ারা গ্রামের বেপারী বাড়ির প্রবাস ফেরত জাকির হোসেন ও তার ছেলে নজরুল ইসলাম রনির প্রতারণার শিকার হয়ে সৌদিতে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন কয়েকশ' বাংলাদেশি। সেইসঙ্গে সৌদি নাগরিকদের কাছে চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।

জানা যায়, জাকির ও রনির অধীনে কাজ করা কয়েকশ' বাংলাদেশির চার/পাঁচ মাসের বেতনের টাকা নিয়ে সৌদি থেকে পালিয়ে বাপ-ছেলে। এছাড়াও তারা সৌদি স্পন্সরের কাছ থেকে জমি কেনার কথা বলে ২ লক্ষ ২৫ হাজার সৌদি রিয়াল, ফ্লাই আসাস নামক ট্রাভেল এজেন্সি থেকে ৪৬ হাজার সৌদি রিয়াল নিয়ে গা ঢাকা দেয়।

জাকির এবং রনি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় একদিকে যেমন টাকার অভাবে আকামা না বানাতে পেরে অবৈধ হয়ে যাচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি, অন্যদিকে তাদের এই কর্মকাণ্ডে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশিদেরকে ভিন্ন চোখে দেখছেন সৌদিসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকেরা।

জানা গেছে, জাকির এবং তার ছেলে রনি রিয়াদের আল ইয়ানাবী আল দাহাবী নামক একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন। রনি কোম্পানির মালিক হোসাইন মোহাম্মদ গামদীকে বাবা বলে ডাকতেন আর গামদীও তাকে পরিবারের সদস্য হিসেবেই মনে করতেন।

গামদীর এই সরলতার সুযোগ নিয়ে তারা দুজন হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ রিয়াল।

পরবর্তীতে রনি ও জাকির কুমিল্লার লাকসামে গামদীকে জমি কিনে দেওয়ার কথা বলে ২ লক্ষ ২৫ হাজার সৌদি রিয়াল এবং রনি কোম্পানির শ্রমিকদের বেতনের ৭৫ হাজার রিয়াল নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।

হয়রানির শিকার প্রবাসি বাংলাদেশিদের অভিযোগ, রনি একদিকে যেমন তাদের ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন, অন্যদিকে সৌদি নাগরিকদের কাছে তাদেরকে ছোট করে গেছেন।

এদিকে সৌদি নাগরিক গামদী তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, "রনি এবং তার বাবার কাছে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারা আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি এডিট করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে এর বিচার চাই"।  

এই বিষয়ে হোসাইন মোহাম্মদ গামদী বাদী হয়ে রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

রনির ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সম্পর্কিত খবর