অনলাইনভুক্ত হচ্ছেন ঢাকার আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারীরা

সংগৃহীত ছবি

অনলাইনভুক্ত হচ্ছেন ঢাকার আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারীরা

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকা জেলায় ইস্যুকৃত সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র এবং ডিলার লাইসেন্সধারীগণকে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে ডিজিটাল ডাটাবেজে যুক্ত করা হচ্ছে। এর ফলে সরকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং লাইসেন্সধারীর ব্যাপারে সব তথ্য জানতে পারবে। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়  ঢাকা জেলা প্রশাসন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের ধারবাহিক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে সকল সেবা ক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবা প্রদান নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি।

উক্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং ডিজিটাল তথা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নানা পর্যায়ের পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় ঢাকা জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়, ঢাকা কর্তৃক ইস্যুকৃত সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র এবং ডিলার লাইসেন্সধারীগণকে অনলাইন পোর্টালভুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।  

বৃটিশ আমল থেকেই শতাব্দী প্রাচীন ঢাকা জেলা প্রশাসন ঢাকা মহানগরীসহ ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলার সকল আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নসহ এ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ঢাকা জেলা প্রশাসন জনগণের দ্বারে দ্রুততম সময়ে সেবা পৌঁছে দেয়ার যে ব্রত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে তারই অংশ হিসেবে সেবা গ্রহীতাদের সাথে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা, সেবা প্রদানের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণে স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম” গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।  

বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা জেলা প্রশাসন জানায়, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সসমূহের ডিজিটাল তথ্য ভান্ডার তৈরি, লাইসেন্স গ্রহীতাগণের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, লাইসেন্সের দলিল হিসেব সংরক্ষণ, সুনির্দিষ্ট ডিজাইন ও সর্বাধুনিক সুরক্ষা প্রযুক্তির ১৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত স্মার্ট লাইসেন্স কার্ড প্রদান এবং তথ্যসমূহের সঠিকতা অনলাইন ও অফলাইনে যাচাই সুবিধা সম্বলিত প্রক্রিয়াটিই হলো “স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম'।

 

এ প্রক্রিয়াটিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ভ্যারিফিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে আবেদনকারীর অন্য কোনো তথ্য যেমন: ব্যক্তিগত তথ্য, এনআইডি, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স নম্বর, মোবাইল নম্বর, স্মার্ট কার্ড নম্বর ইত্যাদি ছাড়াই শুধুমাত্র ফিঙ্গারপ্রিন্ট ভ্যারিফিকেশনের মাধ্যমেই আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে সকল তথ্য জানা সম্ভব।

"ভিশন ২০২১" এর অনন্য পদক্ষেপ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রায় ঢাকা জেলা প্রশাসন পরিবেশবান্ধব "কাগজ বিহীন" নাগরিক সেবা প্রদান করার জন্য বায়োমেট্রিক সিকিউরিটি সহ অন্যান্য বিশেষ নিরাপত্তা সেবা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত স্মার্ট কার্ডের প্রচলনের মধ্য দিয়ে ভুয়া লাইসেন্স তৈরি ও ব্যবহার বন্ধের মাধ্যমে অপরাধ দমন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিধান ও সামাজিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠভাবে বজায় রাখার জন্য বদ্ধ পরিকর। জেলা প্রশাসন ঢাকার উদ্যোগে এবং স্পেক্ট্রাম আইটি সলিউশন লিমিটেড এর কারিগরি সহায়তায় গত ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ থেকে "স্মার্ট ফায়ার আর্মস লাইসেন্স কার্ড" ইস্যুর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রক্রিয়াটির সফল বাস্তবায়নের নিমিত্ত আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারীগণকে অফিস চলাকালীন সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র শাখায় বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন বুথে চাহিত ডকুমেন্টস ও ফি জমাদানপূর্বক নিজ নিজ লাইসেন্সের রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। ইস্যুর পর কার্ডের সকল তথ্য ঢাকা জেলা প্রশাসনের নিজস্ব পোর্টালে সংরক্ষিত থাকবে। অনুমোদিত নির্দিষ্ট মেয়াদের পর লাইসেন্স নবায়ন না করলে কার্ডটি সয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক হয়ে যাবে।  

ঢাকা জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে ১৮ ধরনের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ডুয়েল ইন্টারফেস কন্টাক্টলেস স্মার্ট কার্ডটি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি কাগুজে লাইসেন্স ব্যবহারের জটিলতা নিরসনে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে।  

বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন শেষ করে আমান উল্লাহ জানান, তার আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সটি আঠারো বছরের পুরনো। লাইসেন্সটি সময়ের সাথে মলিন ও জীর্ণ হয়ে যাওয়ায় ডুপ্লিকেট লাইসেন্স ইস্যু করার পরিবর্তে স্মার্ট লাইসেন্স কার্ডের ইস্যু হলে তার জন্য কাগজের চেয়ে কার্ডটি সংরক্ষণ করা সহজ হবে। তার বাসস্থান উত্তরা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকায় আসতে ট্রাফিক জ্যামে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে আসতে হয়। ব্যাংকের লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নবায়নের ফি জমা দিয়ে অস্ত্র নবায়নের জন্য সম্পূর্ণ একটি কর্মদিবস হাতে নিয়ে আসতে হয়। অস্ত্র নবায়ন পদ্ধতি ডিজিটালাইজড হয়ে গেলে এসব ভোগান্তির হাত থেকে মুক্তি মিলবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

news24bd.tv/আলী