ফেসবুক প্রতারণার ফাঁদ!

ফেসবুকে প্রেম

ফেসবুক প্রতারণার ফাঁদ!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ফেসবুকে তার নামে কয়েকটি আইডি রয়েছে। একটিতে নাম দেওয়া ‘প্রিয়া আক্তার’, আরেকটিতে ‘আশা আশা’। এমনিভাবে আরও বেশ কয়েকটি নামে ফেক (ভুয়া) আইডি রয়েছে তার। এই আইডিতে ব্যবহার করা হয়েছে তামিল সুন্দরী তরুণীদের ছবি।

তার এই ভুয়া আইডি থেকে বিভিন্ন পুরুষের কাছে হাই বা হ্যালো বলে জানানো হতো বন্ধুত্বের আহবান। এক পর্যায়ে মিথ্যা প্রেমের নাটক। পরে দেখা করতে এলেই অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি বা আটকিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা। নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ শুক্রবার দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে রাত ১১টার দিকে উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের নতুনবাজার এলাকার সালাম খানের ভাড়া বাসা থেকে আটক করে প্রতারক চক্রের প্রধান প্রিয়া আক্তারকে (২৬)।
পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ওই চক্রের আরেক সদস্য রিমন হোসেনকে (২২) বনপাড়া পৌরগেট থেকে আটক করে। এ সময় জব্দ করা হয় প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, চারটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও সাতটি সিম কার্ড।

পুলিশের কাছে দেওয়া তথ্যমতে, প্রিয়া আক্তারের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার পাঠুরিয়া গ্রামে। তার স্বামীর নাম সুজন সেখ। আটক রিমন বনপাড়া পৌর শহরের সরদারপাড়া গ্রামের মো. হেকমতউল্লাহর ছেলে।  

থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকালে প্রিয়া আক্তারের আমন্ত্রণে সিলেট থেকে জনৈক এক ব্যবসায়ী বড়াইগ্রামের আহমেদপুরে আসেন। সেখান থেকে প্রিয়ার সহযোগী রিমন মোটরসাইকেল যোগে ওই ব্যবসায়ীকে বনপাড়া প্রিয়ার বাসায় নিয়ে এসে অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এ সময় ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ ১২ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন দেন দরবার শেষে বিকাশের মাধ্যমে ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করার পর প্রতারক চক্রটি ওই ব্যবসায়ীকে বনপাড়া থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে হাইওয়ে সড়কে পৌঁছে দেয়। পরে ব্যবসায়ী বিষয়টি নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জানালে পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের নির্দেশে থানা ও বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দুইটি টীম প্রতারক চক্রটি ধরতে অভিযান চালায়। ওই ব্যবসায়ী প্রিয়ার বাসার ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে না পারায় পুলিশ বিকাশে ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে অবশেষে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, প্রিয়ার সঙ্গে তার ৫ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। বনপাড়ায় ভাড়া বাসায় তার সঙ্গে থাকা কথিত স্বামী সুজন হোসেনও এই প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য। সুজন নিজেকে ডিবি পুলিশ আবার কোনো কোনো সময় র‌্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে থাকেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে কমপক্ষে ছয় থেকে সাতজন সদস্য জড়িত রয়েছেন বলে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন।

ওসি আরও জানান, জড়িত অন্য সদস্যদের খুঁজে বের করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাসিম/তৌহিদ)