দেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে : নাছিম 

দেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে : নাছিম 

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম।

মঙ্গলবার বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন নাছিম।

সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম,  ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাছিম বলেন, পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতাসহ তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ খুনি দলের বিরুদ্ধে ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে আন্দোলন শুরু করেন। তিনি স্বৈরাচার বিরোধী ও গণতন্ত্র হরণকারীদের বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলন করেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনা আলোর মশাল হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।

দীর্ঘ ২১ বছর তিনি লড়াই সংগ্রাম করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠা করেছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সবসময় বাংলাদেশের সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়। এরা দেশকে দ্বিখণ্ডিত করে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। এরা দেশের সাম্প্রদায়িক শক্তির জাগরণ ঘটিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে নষ্ট করতে চায়। এদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদের সকল ষড়যন্ত্র আমরা মোকাবেলা করবো।

বঙ্গমাতার কথা স্মরণ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের ১৩টি বছর কারাগারে ছিলেন। বিশেষ করে ছয় দফা ঘোষণা করার পর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর চোখে রক্ত শুলে পরিণত হন বঙ্গবন্ধু। যে কারণে বারবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে সময় জাতির পিতার একজন দক্ষ অনুসারী হিসাবে, জাতির পিতার যে মূল লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা সে লড়াইয়ে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকদের ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যিনি দক্ষতার সাথে পরিচালনা করেছেন এবং মাতৃস্নেহে যিনি আগলে রেখেছেন তিনি হলেন বঙ্গমাতা। ইতিহাসের মহানায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী ও বাঙালী জাতির পিতা হওয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, পাকিস্তানের সামরিক জান্তা বিরোধী আন্দোলনের মূল শক্তি ছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তিনি ছাত্রলীগের নেতাদের দিকে সবসময় পরামর্শ দিতেন এবং জাতিরপিতার নির্দেশ ও পরামর্শ তাদের সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিতেন। সে অনুযায়ী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালনা করতেন। জাতির পিতার অবর্তমানে তিনি শুধু তার পরিবারের দায়িত্ব পালন করেননি, একজন সফল মাতা হিসেবে তিনি যেমন পরিবারের সন্তানদের দায়িত্ব পালন করেছেন তেমনি কোটি মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি কাজ করেছেন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসিতে ঝোলানোর ষড়যন্ত্র করেছিল পাকিস্তানি শাসকরা। সে দিন দেশের মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছিল। আওয়ামী লীগের মধ্যেই একটি কুচক্রী মহল সেদিন পাকিস্তানিদের সাথে আপোস করতে চেয়েছিল। তারা চেয়েছিলো বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে বের করে আনবে। জাতির পিতা জেলে থাকায় অনেক খবরই তিনি নিতে পারছিলেন না। তখন সেই সংবাদগুলো বঙ্গমাতা তার কাছে পৌঁছে দিতেন। বঙ্গমাতা সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন যে বাঙালি জাতি জেগে উঠেছে। তিনি আপোস করেননি।

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহসভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, তানভীর শাকিল জয়, কাজী শহিদুল্লা লিটন, আবদুল আলীম বেপারী, সালেহ মোহাম্মদ টুটুল, কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, খায়রুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ উর রহমান টিটু, শাহ জালাল মুকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন এবং সাধারণ সম্পাদক তারিখ সাঈদ, উত্তরের সভাপতি ইসহাক মিয়া এবং আনিসুর রহমান নাঈম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল আজিজ প্রমুখ।