ছুটির দিনে লোকারণ্য বানিজ্য মেলা, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল

শুক্রবার জমে উঠেছে বাণিজ্য মেলা। ছবিঃ নিউজ২৪

ছুটির দিনে লোকারণ্য বানিজ্য মেলা, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ঢল

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। এতে স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে বেড়েছে ক্রেতার সংখ্যা। আশানুরুপ ক্রেতা পেয়ে খুশি স্টল মালিকরাও। বলছেন, মেলার শেষদিকে ব্যবসা আরো চাঙ্গা হবে।

ছুটির দিন হওয়ায় শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই হাজার হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। মেলায় প্রবেশ টিকিট কাউন্টারগুলোতে লাইন ধরে টিকিট কাটতে দেখা গেছে। ক্রেতা-দর্শনাথীদের পদচারণায় মেলায় প্রবেশ দ্বারের বাইরে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হয়।

মেলাতে বেচাকেনার ধূম লক্ষ্য করা গেছে। তবে মেলায় পণ্যের দাম বেশী বলে অনেক ক্রেতা অভিযোগ করেছেন। ইচ্ছা থাকলেও কাঙ্খিত পণ্য কিনতে পারেননি বলে অনেকে আক্ষেপ করেছেন।

মেলাতে কাপড়-চোপড়, গৃহস্থালী পণ্য, আসবারপত্র, ইলেকট্রনিক্স, হস্ত শিল্প, জুতার দোকান, মসলার দোকানসহ বিভিন্ন দোকানে প্রচুর ভীড় ও বেচাকেনা লক্ষ করা গেছে।

দিল্লী এলুমিনিয়াম ফ্যাক্টরী লিঃ এর বিক্রয় কর্মী খোরশেদ আলম জানান, বেচাকেনা হচ্ছে। তবে এখনো কাঙ্খিত বেচাকেনা শুরু হয়নি। পণ্যের দাম বেশী, ক্রেতাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে বলেন, গতবারের তুলনায় এবার আমরা ৩-৫% দাম বাড়িয়েছি মাত্র।

তৈরী পোশাকের দোকান প্রভিডেন্স এর ইনচার্জ মোঃ ফারুক জানান, বেচাকেনা গতবারের তুলনায় ভাল হচ্ছে। মেলা উপলক্ষ্যে পুরো মাস জুড়ে আমরা ৫০% ডিসকাউন্ট দিয়েছি। আমাদের শো-রুমে দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতাই বেশি। গত শুক্রবার আমরা বিক্রি করেছিলাম ৭ লাখ টাকা ,এ শুক্রবার ১০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে আশা করছি।

হোম টেক্সটাইল গুডস লিঃ এর ম্যানেজার মোঃ মাহফুজ জানান, ভাংতি মাস এবং মাসের শেষের দিকে মেলা শুরু হওয়ায় এতদিন বেচাকেনা তেমন হয়নি। তবে মাস শেষে চাকুরীজীবীদের বেতন হওয়ায় আজকে বেচাকেনা ভাল হচ্ছে। তবে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পুরো ফেব্রুয়ারি মাস মেলা বজায় রাখতে হবে।

আরও পরুনঃ জমে উঠেছে বাণিজ্য মেলা

মিনিষ্টার ইলেকট্রনিক্স এর ইনচার্জ মোঃ রণি জানান, বেচাকেনা খুব ভাল। প্রথমে বেচাকেনা এমনিতেই কম থাকে। এখন আশানুরুপ বেচাকেনা হচ্ছে, সামনে আরও বাড়বে আশা করছি।

হাতিম ফার্নিচারের এসিসটেন্ট ম্যানেজার মোঃ ওমর ফারুক জানান, সরকারী ছুটির দিনগুলোতে ভাল বেচাকেনা হচ্ছে। পণ্যের দাম গতবারের তুলনায় ২০% বেড়েছে।

পরিবার পরিজন নিয়ে মেলায় এসেছেন অনেকে। কেনাকাটাও করেছেন বেশ। এবার দেশি-বিদেশি মিলে মেলায় মোট ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। দেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়া, ভারতসহ ৬টি বিদেশি রাষ্ট্রের ১০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলাকে আর্কষনীয় করতে বাচ্চাদের জন্য রয়েছে মিনি শিশুপার্ক। রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুডকোর্ট। বড় পরিসর হচ্ছে মেলা, পরিবেশও ভালো হয়েছে।

ঢাকা থেকে আসা দর্শনার্থী তুহিন খন্দকার বলেন, মেলা পরিবেশ মোটামুটি ভাল। দাম গতবারের তুলনায় একটু বেশি। টুকটাক কিছু কিনেছেন, আরও কিছু কিনবেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে থানমন্ডি থেকে আসা রেহানা আক্তার বলেন, ফার্মগেট থেকে বাস সার্ভিস থাকায় খুব সহজে মেলায় আসতে পেরেছেন, তবে প্রবেশমুখে যানজট ছিল।

আরও পরুনঃ জমে উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা

কাকরাইল থেকে আসা গৃহবধূ পারভীর ইমতিয়াজ বলেন, মেলায় এসে কিছু বেডশীট ও বালিশের কভার কিনেছি। মেলার পরিবেশ ভাল। তবে মেলার প্রবেশমুখে জানজটের কারনে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।

মেলায় প্রবেশের টিকিট ইজারাদার আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আঃ আজিজ জানান, মেলা শুরু ২য় শুক্রবারে ৭০ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে। মেলায় প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ফ্রি। মেলা খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

এবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ছোট-বড় মিলে ৩৩০টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়নে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে হাজির হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ–চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের প্রদর্শনী কেন্দ্রের স্থায়ী অবকাঠামোর ভেতরে ও বাইরে মিলিয়ে এবারের মেলা সাজানো হয়েছে। এতে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতে পারছেন। আর ছুটির দিনগুলোতে মেলায় বেচাকেনাও হচ্ছে জমজমাট।

news24bd.tv/DHL