২৪ দেশের ৫৯ শতাংশ মানুষ নিজ দেশের গণতন্ত্র নিয়ে সন্তুষ্ট নন

পিউ রিসার্চ সেন্টারের লোগো--তাদের ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত ছবি।

২৪ দেশের ৫৯ শতাংশ মানুষ নিজ দেশের গণতন্ত্র নিয়ে সন্তুষ্ট নন

২৪ দেশের ৫৯ শতাংশ মানুষ নিজ দেশের গণতন্ত্র নিয়ে সন্তুষ্ট নন। ৭৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন তাদের দেশের গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত নেতারা জনগণের চিন্তাধারা ও জীবন সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন না, এমনকি তোয়াক্কাও করেন না। এরাও সন্তুষ্ট নন।  

গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত বিশ্বের ২৪টি গণতান্ত্রিক দেশে অন্তত ৩০ হাজার ৮৬১ জন মানুষের অংশগ্রহণে একটি জরিপ পরিচালনা করে।

এই জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গত বৃহস্পতিবার(২৯ ফেব্রুয়ারি) ।
নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে পিউ রিসার্চ সেন্টার জানায়,৭৭ শতাংশ মানুষ প্রতিনিধিত্বশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অন্যান্য ব্যবস্থার থেকে ‘ভালো’ বলেন। তবে তাদের মধ্যেই ৫৯ শতাংশ উত্তরদাতা নিজ দেশে গণতন্ত্র চর্চা বা শাসন প্রক্রিয়াটির প্রয়োগ নিয়ে সন্তুষ্ট নন।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ৭৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন তাদের দেশের গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচিত নেতারা জনগণের চিন্তাধারা ও জীবন সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন না, এমনকি তোয়াক্কাও করেন না।

বুধবার গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার একটি গবেষণামূলক জরিপ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বর্তমানে সরকারব্যবস্থা হিসেবে প্রতিনিধিত্বশীল গণতন্ত্র এখনও পছন্দের শীর্ষে । তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতান্ত্রিক কাঠামো ভঙ্গুর অবস্থায় থাকার কারণে দিন দিন এই শাসনব্যবস্থার আবেদন কমছে।

পিউ রিসার্চ সেন্টার 
গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, বিশ্বের 

জরিপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, কোনো রাজনৈতিক দলই জনগণের চাহিদার পূর্ণ বা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।  

জরিপে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশে নারী নেত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারীরাই বেশি ভোট দেন এবং তরুণ নেতা নির্বাচনে ৪০ বছরের কম বয়সী ভোটররাই বেশি ভোট দেন।  

আর্জেন্টিনা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ব্রাাজিলের জনগণদের অনেকাংশই ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের রাজনৈতিক নেতা নির্বাচনে অনাগ্রহী।

জরিপে দেখা যায় বিশ্বের ১৩টি দেশের মানুষ মনে করেন তাদের দেশে এমন একজন শক্তিশালী নেতার প্রয়োজন যিনি পার্লামেন্টের ও আদালতের বাধা ছাড়াই নিজের সিদ্ধান্তের দ্বারা দেশকে পরিচালনা করবেন যেখানে অবশ্যই জনগণের রায়ের প্রতিফলন থাকবে। ৪টি মধ্যম-আয়ের দেশের মানুষও এই ধারণাকে সমর্থন করেন।
গ্রীস, জাপান ও যুক্তরাজ্যের ১৭ শতাংশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ শতাংশ মানুষ সামরিক শাসনকে সমর্থন করেন।

জরিপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের মানুষের মতামত অনুযায়ী, ২৪টি দেশের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মাত্র ১০ জন নেতা নিজ নিজ দেশের জনগণের একটি বড় অংশ থেকে ইতিবাচক রেটিং পেয়েছেন।  

এর আগে ২০১৭ সালে একই ধরনের আরেকটি জরিপ করেছিলো পিউ রিসার্চ সেন্টার। সেসময় বিশ্বের অধিকাংশ মানুষই গণতান্ত্রিক শাসনব্যস্থাকে ‘খুব ভালো’ বলে সমর্থন করেন। তবে ২০২৩-২০২৪ সালে বিশ্বের মানুষের গণতন্ত্রের প্রতি অসন্তুষ্টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন গবেষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ।

এ বিষয়ে পিউ রিসার্চ সেন্টারের গ্লোবাল অ্যাটিচিউড গবেষণা বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিচার্ড উইক জানান, জনগণ প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র পছন্দ করে। তবে বর্তমানে যা ঘটছে তা সত্যিই হতাশাজনক। জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতায় ভুগছে।  

news24bd.tv/ডিডি