জনশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে সরকারের পরিকল্পনা

জনশক্তির দক্ষতা ও মেধাকে কাজে লাগাতে দরকার যথাযথ পরিকল্পনা।

জনশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে সরকারের পরিকল্পনা

মুরসালিন হক জুনায়েদ

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল থেকে সিলিকন ভ্যালি-অবকাঠামোর এমন দারুন সব উন্নয়ন হয়েছে বাংলাদেশে। কিন্তু যাদের জন্য এই উন্নয়ন... সেই জনশক্তির দক্ষতা ও মেধা কতোটা উন্নত? দেশের প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে মূল্যবান যে জনশক্তি..তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতে সরকারের পরিকল্পনাই বা কতটা?

ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট কাকে বলে? কাকে বলে দেশের কর্মক্ষম জনশক্তির সর্বোচ্চ সীমা? এককথায় এর মানে- দেশের কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা, যাদের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছর পর্যন্ত। এই জনগোষ্ঠির বড় সুফল দেখা যায় রাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিতে।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতে এই সুবিধা শুরু হয়েছিল ৮০র দশকের শুরুতে, যা শেষ হবে ২০৪০।

আবার চীনে এই সুবিধা ছিল ২০১০ সাল পর্যন্ত। যাকে কাজে লাগিয়ে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে উঠাতে পেরেছিল তারা। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, বাংলাদেশের এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দ্রুত কার্যকর কৌশল প্রণয়ন ছাড়া বিকল্প নেই।

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে এই প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন, শিক্ষা এসবের একটা সংশ্লেষ আমাদের করতে হবে।

অর্থনীতিবিদরা জানান, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা- এসডিজি বাস্তবায়নে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠিকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সে উদাহরনও আছে বাংলাদেশের সামনে।

সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেন, ভারতের মতো এনআইআইটি, আইআইটি এরকম সংস্থ্যাগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া প্রাইভেট সেক্টরকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

অথচ কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৩৯ শতাংশেরই কোনধরনের শিক্ষা নেই, নেই প্রশিক্ষণ, যে কারণে তারা কর্মহীনও বটে। আর এই জনগোষ্ঠীর ৬০ ভাগই নারী। খোঁদ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপেই উঠে এসেছে এই তথ্য। যদিও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠির জন্য যে পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার, তার সুফল দেখতে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ সরকারের সদ্যসাবেক মন্ত্রীর।

সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ মান্নান বলেন, সরকার প্রযুক্তি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছে। অনেক প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান খুলেছে। সেখানে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা হচ্ছে। একটু তো ধৈর্য্য দরকার।

ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর স্থায়ী হয়। বাংলাদেশ এই সুযোগ পাবে ২০৩৯ সাল পর্যন্ত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবকাঠামোর সঙ্গে সমান তালে মেধার উন্নয়ন না হলে প্রবৃদ্ধির কাঙ্খিত লক্ষ্য অধরাই থেকে যায়। ক্ষমতার দীর্ঘ পথ হেটে আওয়ামী লীগ সরকার উন্নতির যে স্বপ্ন মানুষকে দেখিয়েছে তার সার্বিক সুফল নির্ভর করছে শিক্ষা-প্রশিক্ষণে মানুষের এই শক্তিকে কাজে লাগানোর উপর।

news24bd.tv/DHL