পায়ে হেঁটে বিশ্বভ্রমণ শুরু করা বাংলাদেশি তরুণ হাইকার সাইফুল ইসলাম শান্ত (২৮) এখন গোপালগঞ্জে। ‘গাছ বাঁচান, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনুন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে যাত্রা শুরু করা যুবক শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে গোপালগঞ্জে এসে পৌঁছান।
এর আগে গত ২২মার্চ (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকার সংসদ ভবন এলাকা থেকে তিনি যাত্রা শুরু করেন। এক সপ্তাহের পথপরিক্রমায় তিনি শনিবার গোপালগঞ্জে যান।
এদিন বিকেলে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উপজেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে রাত্রিযাপন করছেন তিনি।
আগামীকাল রোববার (৩১ মার্চ) সকালে তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ছেড়ে নড়াইল জেলার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। এই হাইকার তরুণ কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলা সদরের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে এবং ঢাকার যাত্রাবাড়ি দনিয়া কলেজ থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ থেকে স্নাতক (অনার্স) ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
শনিবার দুপুরে হাইকার সাইফুল ইসলাম শান্ত গোপালগঞ্জ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে যান এবং সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
ভ্রমণের অর্থ যোগানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাইলেজ অনুসারে স্পন্সর নিচ্ছি আমি। নিজের সঞ্চিত সামান্য কিছু অর্থ, বাবার দেয়া ১০ হাজার টাকা আর প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ডলার স্পন্সর পেয়েছি। এই অর্থ নিয়ে আমার পথচলা শুরু।
সাইফুল ইসলাম শান্ত আরও বলেন, ২২ মার্চ ‘ঢাকা থেকে হাঁটা শুরু করি। পদ্মা সেতু পায়ে হেঁটে পারাপার হওয়া যাবে না বিধায় বাসে পারাপার হয়েছি। টোল প্লাজায় নেমে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলা সদরে আসি। সেখান থেকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক ধরে টেকেরহাট আসি শুক্রবার। পরে টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ সড়ক হয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উপলপুর এসে সন্ধ্যা নামে। পরে রাত ১০টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ছাত্র হোস্টেলে আসি। সেখানে রাত্রি যাপন করি। শনিবার গোপালগঞ্জ জেলা সদর থেকে রওনা হয়ে বিকেলে পৌঁছাই টুঙ্গিপাড়ায়। সেখানে রাত্রিযাপন শেষে রোববার সকালে যশোর-বেনাপোল সীমান্ত পার হয়ে কলকাতায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা নিয়ে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করবো। এরপর ভারতের ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তর প্রদেশ হয়ে দিল্লিতে পৌঁছানোর ইচ্ছা রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী উজবেকিস্তান যাওয়ার কথা রয়েছে। তারপর পর্যায়ক্রমে মধ্য এশিয়ার তুর্কমেনিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, কাজাখস্তান, মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনসহ ক্রমান্বয়ে এশিয়ার অন্যান্য দেশ ভ্রমণ করার আশা প্রকাশ করেছেন এই যুবক। এরপর আফ্রিকা এবং ইউরোপ ভ্রমণের পরিকল্পনা করবেন তিনি।
এরপর উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ ভ্রমণের পর অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ গিয়ে বিশ্বভ্রমণের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন বলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন।