ছিল না স্নাতকোত্তর কোর্স, তবুও পেলেন সনদ!

ছিল না স্নাতকোত্তর কোর্স, তবুও পেলেন সনদ!

অনলাইন ডেস্ক

২০১৭ সালে স্নাতকোত্তর কোর্সের কার্যক্রম ছিল না গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে, কিন্তু সেই কোর্সেরই একমাত্র শিক্ষার্থী হিসেবে সনদ নিয়েছেন ওই বিভাগের চেয়ারপারসন আক্কাছ আলী।

ভর্তি দেখানোর ছয় মাসের মাথায় ক্লাস, পরীক্ষা ও থিসিস শেষ করে সার্টিফিকেট উঠে যায় তার হাতে। তবে তার ক্লাস আর পরীক্ষা কখন, কোথায়, কীভাবে হয়েছে, তা জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়টির ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের তৎকালীন ডিন শাহজাহান আলী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক শাহজাহান বলেন, 'আমার মনে হচ্ছে, এগুলো ফলস অ্যান্ড ফেব্রিকেটেড।

এই ধরনের কোনো কোর্স চালু হওয়া কিংবা পরীক্ষা হওয়ার বিষয়ে আমরা জানতাম না, যেটা আমাদের জানার কথা ছিল। '

আক্কাছ আলীর ভাষ্যমতে যে কয়েকজন শিক্ষক তার ক্লাস-পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের একজন মৌসুমী বালা। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন তিনি।

আক্কাছ আলীর ট্রান্সক্রিপ্ট ‘যাচাইকারী’ হিসেবে স্বাক্ষর করলেও তার ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে জানা ছিল না তারও।

মৌসুমী বালা বলেন, 'তখন আমি সবেমাত্র জয়েন করেছি বিভাগে। আমাকে চেয়ারপারসন যা করতে বলেছেন, তাই করেছি। এর বাইরে কিছু করার ছিল না। '

স্বাক্ষর করার আগে ‘পরীক্ষার খাতাও’ তাকে দেখানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আমি অবাক হয়েছিলাম, উনি যদি ছাত্র হন, তাহলে উনার কাছে খাতা থাকে কীভাবে? তবুও ট্রান্সক্রিপ্টে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছি। এরপর তো আমি চলেও আসছি। '

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আক্কাছ আলী বলেন, 'কোর্স চালু ছিল আগে থেকে। তবে কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। প্রথম ব্যাচের আমি ভর্তি হয়ে শেষ করেছিলাম, যেহেতু আমার মাস্টার্স করা ছিল না। '

অনার্স পাস করা শিক্ষার্থীরা ২০১৮ ও ২০১৯ সেশন থেকে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হচ্ছেন বলে জানান যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে থাকা এই শিক্ষক।

সনদ জালিয়াতি বিষয়ে টেলিফোনে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম গোলাম হায়দার বলেন, 'এখন ঝামেলার মধ্যে আছি, পরে ফোন করব। 'এরপর ফিরতি ফোন আর আসেনি। ফোন করলেও ধরেননি গোলাম হায়দার।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিনকে ফোন করে এবং এসএমএস পাঠিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

এই উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগে তার পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)