ট্রেন দুর্ঘটনা: হেলিকপ্টার ব্যবহারের দাবি

ট্রেন দুর্ঘটনা: হেলিকপ্টার ব্যবহারের দাবি

অনলাইন ডেস্ক

ট্রেন দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে বহু। এদিকে গুরুতর আহতদের জীবন রক্ষায় হেলিকপ্টার ব্যবহারের দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

হেলিপপ্টারে করে আহতদের দ্রুত ঢাকায় এনে সিএমএইচ এবং পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ মঙ্গলবার (নভেম্বর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতদের দ্রুত উদ্ধার ও বিনামূল্যে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।

একইসঙ্গে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

তিনি নিহত প্রত্যেক পরিবারের কাছে রেলওয়ের খরচে লাশ পৌঁছে দেওয়া এবং হতাহত প্রত্যেক পরিবারের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়েতে পদে পদে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট ও দায়িত্ব পালনে গাফিলতির মহোৎসব চলছে। এখানে দুর্নীতিবাজরা পুরস্কৃত হচ্ছে, সৎ কর্মকর্তারা কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। যাত্রীসেবার মান ও ট্রেনের গতি গাণিতিক হারে নিম্নমুখী হচ্ছে। অথচ সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা রেলকে গতিশীল করতে প্রায় অর্ধশত যাত্রীবান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়ন করে এসব প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, এই রেল দুর্ঘটনায় দায়িত্ব পালনে গাফিলতিকারী অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং ত্রুটি, ঠিকাদারের দুর্নীতিতে যারা জড়িত থাকুন না কেন, তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হোক।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বগির নিচে আরো মরদেহ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হতাহতদের উদ্ধার কাজ চলছে। অনেকের কাটা হাত-পা উদ্ধার হচ্ছে।

এ দৃশ্য অসহনীয় উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা জানান, সম্ভবত একটি শিশু ভেতরে রয়ে গেছে। সকাল সাতটা নাগাদ তাকে জীবিত বা মৃত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

দুর্ঘটনায় উদয়নের দুটি বগি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।

এদিকে তূর্ণা নিশীথার চালক ট্রেন সিগন্যাল অমান্য করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মন্দবাগ স্টেশনের মাস্টার জাকির হোসেন চৌধুরী বলেন, তূর্ণার চালক তথা লোকো মাস্টারকে ট্রেন থামানোর জন্য আউটার ও হোম দুই স্থানেই লাল বাতি সংকেত দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত চালক ট্রেন দাঁড় করাননি। ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তূর্ণার যাত্রী কাজী ফজলে রাব্বী সকালে বলেন, ভয়াবহ ঝাঁকুনির পর ট্রেন থেমে যায়। তারপর তিনি নেমে দেখেন ভয়াবহ দৃশ্য।

ট্রেন দুটো দুই দিকে যাচ্ছিল। কর্মকর্তারা জানান, উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথার মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে চলন্ত অবস্থায়। উদয়নকে লুপ বা সাইড লাইনে যখন পাঠানো হচ্ছিল তখন এর পেছনের তিনটি বগি মূল লাইনে থাকতেই ঢাকাগামী তূর্ণা চলে আসে এবং এ সংঘর্ষ ঘটে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর