করোনা রোগীর চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) দ্রুত এগিয়ে চলছে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণের কাজ। যেভাবেই হোক, আগামী ২৭ এপ্রিলের মধ্যে হাসপাতালটি তৈরির কাজ শেষ করতে চায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এজন্য শুধু দিনে নয়, কাজ চলছে রাতেও। আজ বুধবার আইসিসিবি'র এক্সপো জোনে হাসপাতাল নির্মাণস্থলে কাজের তদারকি করতে করতে সাংবাদিকদের কথাগুলো বলছিলেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ঢাকা সিটি বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম।
তিনি বলেন, মূলত আমরা নির্মাণ কাজটি শুরু করেছি ১২ এপ্রিল। এর আগে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করতে হয়েছে। লক্ষ্য হলো ১৫ দিনের মধ্যে এখানে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা। সেই হিসেবে দিন-রাত বিরামহীন কাজ চলছে।
এদিকে আজ আইসিসিবি'র এক্সপো জোনে গিয়ে দেখা গেল, সুবিস্তৃত কম্পাউন্ডজুড়ে ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে ছোট ছোট অনেক কক্ষ। প্রকৌশলী মো. মাসুদুল আলম জানান, এই কক্ষগুলোতে চিকিৎসক, নার্সরা বসবেন। পাশেই কয়েকটি ক্লাস্টারে রোগীর শয্য বসবে। ছোট ছোট ক্লাস্টারে ভাগ করে আইসোলেশন ইউনিট হবে, যা সিসি ক্যামেরার পর্যবেক্ষণে থাকবে। নার্স ও চিকিৎসরা সরাসরি দেখতে পারবেন কোন রোগীর কী অবস্থা।
তিনি জানান, আইসিইউ বাদে মোট দুই হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল হবে। এক্সপো জোনে হবে ১ হাজার ৪৮৮ শয্যা। তিনটি কনভেনশন হলে হবে ৫২৫ শয্যা। এর বাইরে বড় যে কনভেনশন হলটা আছে সেখানে হবে ৭১ শয্যার আইইসিইউ। আমাদের সময়সীমা ১৫ দিন। নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর সরাসরি তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও কাজ পর্যবেক্ষণ করছে। ঘরগুলো প্রস্তুত আছে। এখন রোগীর বসার জায়গা, চিকিৎসক চেম্বার, নার্স স্টেশন- এসব তৈরির কাজ চলছে। রোগী ও অন্যদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও হাসপাতালের মধ্যেই হবে। বিভিন্ন কাজের জন্য লোকবল ভাগ করা আছে। রাতেও কাজ করছে তারা। আমাদের চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই। আশা করছি নির্ধারিত সময়েই কাজ শেষ করতে পারব।
উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিসাপেক্ষে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে দুই হাজার শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরে সাধারণ শয্যা ১৩টি বাড়ানো হয়। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)