যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ অ্যামনেস্টির

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ অ্যামনেস্টির

অনলাইন ডেস্ক

আমেরিকা ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অজুহাতে বিভিন্ন দেশে সেনা সমাবেশ ঘটায়। বিশেষ করে ইরাক ও আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে ওই দেশ দুটি দখল করে নেয়।

এ ছাড়া, তারা পাকিস্তান, ইয়েমেন ও সোমালিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা ও আগ্রাসনে এসব দেশের হাজারো মানুষ নিহত এবং বহু অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।

এতো প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের পরও মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করতেন সীমিত আকারে চালানো এসব অভিযানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই সামান্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সবসময়ই মার্কিন এ দাবির  বিরোধিতা করতো।

সম্প্রতি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশে সামরিক হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা গোপন করছে। এই সংস্থা এক বিবৃতিতে বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ব্যাপারে মার্কিন মিথ্যাচারের স্বরূপ তুলে ধরে বলেছে, ওয়াশিংটন নিহতের সঠিক পরিসংখ্যান গোপন করছে।

 

গত বছর মার্কিন হামলায় মাত্র ১৩০ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে পেন্টাগন যে দাবি করেছে সে ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশে সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালিয়ে আমরা জানতে পেরেছি মার্কিন বিমান হামলায় যেসব হতাহতের ঘটনা ঘটছে প্রকৃত সংখ্যার তার চেয়ে অনেক বেশি।  

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন সিরিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ দখল করে আছে এবং আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে তথাকথিত আন্তর্জাতিক জোট গঠন করেছে। প্রতিনিয়ত মার্কিন হামলায় সেখানে অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রাণ হারালেও আমেরিকা সে সংক্রান্ত তথ্য গোপন করছে। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণে দেখা গেছে আইএস বিরোধী কথিত জোট যখন সিরিয়ায় বিমান হামলা চালাচ্ছে তখন তারা সাধারণ মানুষকে রক্ষার জন্য কোনো রকম সতর্কতা অবলম্বন করছে না। আসলে নিরীহ মানুষের জানমাল রক্ষার বিষয়টি আমেরিকার কাছে মোটেও গুরুত্ব পাচ্ছে না। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বহু মানবাধিকার সংগঠন মার্কিন এ আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৮ সালেও এক বিবৃতিতে বেসামরিক মানুষ হতাহতের ব্যাপারে সঠিক তদন্তের জন্য দায়েশ বা আইএস বিরোধী মার্কিন নেতৃত্বাধীন কথিত আন্তর্জাতিক জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আফগানিস্তানসহ যেকোনো দেশে মার্কিন সেনাবাহিনীর অপরাধযজ্ঞের তদন্ত কাজে ওয়াশিংটন বাধা দিচ্ছে। আমেরিকা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি তদন্তেরও বিরোধিতা করছে এমনকি কেউ এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দিচ্ছে। সেনারা যতই অপরাধযজ্ঞে লিপ্ত হোক না কেন মার্কিন সরকার তাদেরকে বিচারের ঊর্ধ্বে বলে মনে করে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর