আলু চক্রে কারা জড়িত?

আলু চক্রে কারা জড়িত?

শংকর মৈত্রী

ভারত যেদিন পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধ করে দিলো সে দিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ানো শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত তা ১০০ টাকা কেজিতে ঠেকেছে।

ভারত কেনো পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলো এ জন্য আমরা তাদের বিরুদ্ধে একহাত নিয়েছি। তাদের সঙ্গে যে বন্ধুত্ব হবে না সেটাও বলেছি। অতি বিপ্লবীরা,বাঁশের কেল্লার সহযোগীরা ভারত বিরোধিতায় ফেসবুক, ইউটিউব ফাটিয়ে ফেলেছেন ।

দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব নষ্ট হচ্ছে সীমান্ত হত্যা আর পেঁয়াজ নিয়ে।

ধরেই নিলাম ভারত খারাপ দেশ এবং তাদের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব হবে না। তারা পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধ করে দেয়ায় এখানে দাম বেড়ে গেছে।

কিন্তু আলুর কেজি ২০ টাকা থেকে ৬০ টাকা হলো কেনো? ভারত কী আলু রপ্তানীও বন্ধ করে দিয়েছে? পেঁয়াজ নিয়ে যারা ভারতের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়েছেন আলু ঘটনায় তারা নীরব কেনো? 

আলু চক্রে কারা জড়িত? কৃষকতো ৮ মাস আগে ৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করে দিয়েছে কোল্ডস্টোরেজের মালিকদের কাছে।

সব আলু কোল্ড স্টোরেজে আছে। এমনতো নয় যে, গ্রামে গ্রামে বা প্রতি উপজেলায় কোল্ড স্টোরেজ আছে। দেশে হাতে গোনা কোল্ডস্টোরেজ। এদের তালিকা সরকারের কাছে আছে। এসবের মালিক কারা তা ১০ মিনিটের মধ্যে সরকার বের করতে পারে। এই ঠাণ্ডা গুদামঘরের মালিকদের চক্রইতো আলুর দাম বাড়িয়েছে। এদের নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারের গলদঘর্ম হতে হয় কেনো? দাম বেঁধে দিলেও তা কার্যকর করতে পারে না কেনো? কারা এই সিন্ডিকেটে? কি সেই রহস্য? বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার একটা সীমা থাকা দরকার না? এটা কী চলতেই থাকবে?

পেঁয়াজের দাম বাড়ালেন, আলুর দাম বাড়ালেন কিন্তু সয়াবিন তেলের দাম বাড়ালেন কেনো? পনেরো দিন আগে ৫ লিটারের তেল কিনেছি ৪৮০ টাকা দিয়ে। আজ কিনলাম ৫৭০ টাকায়। দোকানদার বললো আরও বাড়বে। কারণ কি? ভারত কী সয়াবিন তেলও রপ্তানী করে? রপ্তানী বন্ধ করে দিয়েছে? দোকানিরা বলছেন কোম্পানি তাদের চাহিদামতো তেল সরবরাহ করছে না।

এটা কোনো কথা হতে পারে? দিনেদুপুরে এমন ডাকাতি!

কোম্পানিগুলোকে সরকার জিজ্ঞেস করেছে তারা কেনো সয়াবিন তেলের দাম বাড়ালো? এটা কী বাণিজ্য,শিল্প,অর্থ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব না?


আরও পড়ুন: বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ও ১০০১ এ আমার বিচরণ


শুধু পেঁয়াজ আলু আর তেলে মাসে সংসার খরচ ৫শ টাকা বাড়িয়ে দিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। করোনার কারণে সংসার চালাতেই আমাদের মতো মানুষরা হিমসিম খাচ্ছি, সেখানে আরও খাঁড়ার ঘা দিলেন? বাণিজ্যমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রীর সংসারে এই কষ্টের আঁচ পড়ে না। এই করোনাকালিন সময়েও তারা কয়েকদফা সিঙ্গাপুর গিয়ে চিকিৎসা, চেকআপ করে এসেছেন। অর্থকষ্ট তাদের নেই। ফলে আমাদের কষ্ট তাদের বোঝার কথা না। তাদের সংসারে এই সয়াবিন তেল দিয়ে রান্নাও হয় না। তারা অলিভওয়েল দিয়ে রান্না করে খান।  কিন্তু তাদের কি কোনো দায়িত্ববোধ থাকবে না দেশের প্রতি? জনগণের প্রতি কোনো ভালোবাসা থাকবে না? 

আমি কোনো জবাব পাচ্ছি না।  
কে দেবে আমাকে এর জবাব?

লেখক: শংকর মৈত্রী , সাংবাদিক

news24bd.tv আহমেদ

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর