কুয়েতেও এমন মুলা পাওয়া যায়

কুয়েতেও এমন মুলা পাওয়া যায়

মঈন সুমন, কুয়েত

কুয়েতের মরুভূমিতে এমন মুলা ফলান বাংলাদেশিরা। ৫০ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সে. গরমে উত্তপ্ত ধোয়া আর শীতে ০ কিংবা -২ তাপমাত্রার ঘনকুয়াশায় কখনো তুষার ঝড় এমন বৈরীপূর্ণ আবহাওয়া সম্পূর্ণ দূসর বিস্তীর্ণ মরুভূমিতে আবদ্ধ দেশ কুয়েত। লবনাক্ত পানি থেকে প্রযুক্তির জোড়ে আর মেধা খাটিয়ে তৈরী হচ্ছে মিঠা পানি।  

স্থানীয় নাগরিকদের সহযোগিতায় মরুভূমিতে বাংলাদেশি ভাইদের মেধা আর শ্রম এই দেশকে সবুজে সাঝাতে রয়েছে অতুলনীয় অবদান।

দেশি বিদেশি নানান ফল মূল ফলাচ্ছেন এই মরুভূমিতে। কুয়েতে দেশি সবজি চাষের রহস্য খুঁজতে গিয়ে জানতে পারলাম ছুটিতে দেশে গিয়ে কুয়েতে আসার সময় সাথে দেশি লাউ, সিম, ঢেঁড়শ, বেগুন, পুইশাক, মুলাসহ অনেক শাক সবজির বীজ নিয়ে আসেন, সেই বীজ থেকে ধূসর মরুভূমির বালুতে ফলান এই সবজি। সেই শ্রমের দেশিয় স্বাদ গ্রহণ করি আমরা সূদুর মরু দেশে।

পুষ্টিবিদেরা বলেন, মুলার অনেক পুষ্টিগুণ।

যকৃৎ ও পাকস্থলী পরিস্কারে মুলার জুড়ি মেলা ভার। নিয়মিত তাই খাবার টেবিলে মুলা রাখতেই পারেন। মুলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। তাছাড়া মুলায় আরো কিছু বিশেষ গুন আছে যেমন...

১. রক্তে অক্সিজেন বাড়ায়: রক্তের লোহিত কণিকা ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে মুলা। মুলা খেলে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে।
২. যকৃৎ সুরক্ষা করে: মুলায় প্রচুর ফাইবার আছে। প্রতিদিন যদি সালাদের সঙ্গে অল্প পরিমাণে মুলা খাওয়া যায়, তবে শরীরে ফাইবার আসায় হজম ভালো হয়। এটি পিত্ত উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে, যকৃৎ ও গল ব্লাডারকে রক্ষা করে। শরীরে পানি ধারণক্ষমতার বাড়াতে মুলা খাওয়া যেতে পারে।
৩. হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায়: হৃদযন্ত্র সুরক্ষা করতে পারে মুলা। এতে আছে অ্যান্থোসায়ানিনস, যা হৃদ‌যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। তাই বেশি মুলা খেলে হৃদ‌রোগের ঝুঁকি কমে। এটি ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড ও ফ্লাভোনয়েডসের ভালো উৎস।
৪. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে: মুলায় আছে পটাশিয়াম, যা শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে। যাঁরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন, তাঁরা মুলা খেতে পারে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়, রক্ত শীতলকারী প্রভাব আছে মুলায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: এতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় সাধারণ সর্দিকাশি থেকে সুরক্ষা দেয় এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত মুলা খেলে শরীরে ক্ষতিকর মুক্ত উপাদান তৈরি হয় না। এ ছাড়া প্রদাহ ও অকালবার্ধক্য দূর হয়।
৬. রক্তনালি শক্তিশালী করে: কোলাজেন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মুলা, যা রক্তনালিকে শক্তিশালী করে এবং অথেরোসক্লেরোসিস নামের ধমনির রোগ হতে বাধা দেয়।
৭. বিপাকের বন্ধু: শুধু পাচনতন্ত্রই নয়, এটি বিপাকেরও ভালো বন্ধু। অম্ল, স্থূলতা, গ্যাসট্রিক, মাথাব্যথা, বমিভাব দূর করে মুলা।


আরও পড়ুন: অবৈধ মোবাইল ফোন বন্ধ হচ্ছে আগামী এপ্রিলে


৮. উচ্চ পুষ্টিগুণ: লাল মুলায় ভিটামিন ই, এ, সি, বি৬ ও কে আছে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টেও ভরপুর। এতে আছে ফাইবার, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাংগানিজ। এসব উপাদান আমাদের শরীরকে কর্মঠ রাখতে সাহায্য করে।

৯. ত্বকের জন্য ভালো: প্রতিদিন মুলার জুস খেলে ত্বক সতেজ থাকে। মুলায় থাকা ভিটামিন সি, জিংক ও ফসফরাস এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। ত্বকের শুষ্কতা, ব্রণ বা দাগ দূর করতে পারে। মুলার পেস্ট তৈরি করে মুখে মাখলে ত্বক সজীব থাকে। এ ছাড়া চুলের খুশকি দূর করতে, চুল পড়া বন্ধ করতে, চুলের গোড়া শক্ত করতে পারে মুলা।
১০. শরীর আর্দ্র রাখে: মুলায় জলীয় পরিমাণ বেশি থাকায় এটি শরীরকে আর্দ্র রাখে।  
কুয়েতেও এমন মুলা পাওয়া যায়।

news24bd.tv আহমেদ