পায়রায় নির্মিত হচ্ছে ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র

পায়রায় নির্মিত হচ্ছে ১৩২০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

পটুয়াখালীর পায়রাতে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যৌথ জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমার্ণ করা হচ্ছে। আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে। এ লক্ষ্যে চীনা কোম্পানি এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের সাথে যৌথ কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রটির সমান অংশীদার হবে এপিএসসিএল ও চীনা কোম্পানিটি।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সরকার এখন দীর্ঘমেয়াদে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে হাঁটছে। স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা মোটামুটি সফল হয়েছে। পায়রা বিদ্যুৎ হাব আমাদের বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশ মেটাবে। এপিএসসিএল’র কেন্দ্রটি সেই পদক্ষেপেরই অংশ।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (এনডব্লিউপিজিসিএল) তত্ত্বাবধানে বর্তমানে পায়রায় ১৩২০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। ওই কেন্দ্র এলাকায় এক হাজার একরের বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পুরো জায়গায় ৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। নির্মাণ চলমান কেন্দ্রটির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪ শ একর জমি। বাকি ৬ শ একর জমিতে অবশিষ্ট ৭ হাজার ৬৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে নানা ধরনের জ্বালানিভিত্তিক কয়েকটি কেন্দ্র নির্মিত হবে।

ওই কর্মকর্তা জানান, এরইমধ্যে আরপিসিএল’র তত্ত্ববধানে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার আরেকটি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র, এনডব্লিউপিজিসিএল’র তত্ত্বাবধানে ৩ হাজার ৬ শ মেগাওয়াটের এলএনজিভিত্তিক, ১ শ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ এবং ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বায়ুভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এবার আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির তত্ত্ববধানে আরেকটি ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, এর আগে চায়না এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এখন কেন্দ্রটির যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন করা হবে। যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠনের পর কেন্দ্র নির্মাণ শুরু হবে।  

গেল এপ্রিলে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি (জেভিএ) চূড়ান্তকরণের লক্ষ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় চুক্তির শর্তগুলো চূড়ান্ত না হলেও সংশ্লিষ্ট সবাইকে জেভিএর খসড়া পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই সব পক্ষ লিখিত মতামত দিবে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

এপিএসসিএল সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে আশুগঞ্জ এবং চায়না ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সমান মালিকানা থাকবে। কোম্পানির বোর্ডেও দুই দেশের ৫০ শতাংশ করে সমান অংশীদারিত্ব থাকবে।

আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী সাধারণত এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। মাটি ভরাটের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কাজ শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

উল্লেখ্য, বিদ্যুতের মহা পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩১ সাল নাগাদ মোট বিদ্যুতে ৩৫ ভাগ কয়লা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কোম্পানিগুলোকে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এটি আশুগঞ্জ কোম্পানির বড় প্রকল্পগুলোর একটি হতে যাচ্ছে।

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর