দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে ঢাকামুখি যাত্রীদের চাপ

দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে ঢাকামুখি যাত্রীদের চাপ

Other

কর্মস্থানে উপস্থিত না থাকলে কর্ম হারাতে হবে। কর্মস্থানে যেতে হলে জীবনের ঝুঁকি নিতে হবে। পরিবার পরিজনকে সুখে রাখতে নিজের জীবন বাজি রেখে কর্মস্থানে যাচ্ছি। কথাগুলো অনেক কষ্ট বুকে নিয়ে বললেন কুষ্টিয়া থেকে ঢাকাগামী আবুল হোসেন।

 

তিনি আরও বলেন, আজ রোববার অফিস। রাত ৯টার সময় দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছি। এখন সকাল ৮টা। কখন ঢাকা যাব, কখন অফিস করব।

তবুও অনিশ্চয়তার মধ্যে কর্মস্থানে যাওয়া ব্যর্থ চেষ্টা করছি।

চুয়াডাঙ্গা থেকে পরিবার নিয়ে ছোট একটি খোলা ট্রাকে ঢাকা যাচ্ছে খবির আহমেদ। তিনি জানান, কষ্ট কাকে বলে বলে বুঝানো যাবে না। সারারাত দৌলতদিয়া ঘাটে পারের অপেক্ষায়। দফায় দফায় বৃষ্টি সব মিলে এত কষ্ট কখনও করি নাই। তবুও কি করার কর্মস্থানে যেতে তো হবে।  

নুরজাহান নামের এক পোশাক শ্রমিক বলেন, আমাদের গরীব মানুষের সব বিষয়ে সংগ্রাম করে চলতে হয়। ঢাকা যেতেও সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যারা রপ্তানিমুখি প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলেন, তারা কিন্ত ঘরের বাহির হবে না। আমাদের ঘরে থাকলে চলবে না। তাই বেঁচে থাকার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার পথে।  

এমনি পরিস্থিতে কর্ম বাঁচানোর জন্য, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজধানী মুখি হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এতে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে কর্মমুখি মানুষের স্রোত দেখা যায়। এদিকে ঢাকামুখি অতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে রাত থেকে লঞ্চ ও গণপরিবহন দুপুর রোববার ১২টা পর্যন্ত চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্ত এই এত কম সময় হওয়ার কারণে শ্রমিকরা গণপরিবহন ও লঞ্চ চালানোর অনিহা করে। যে কারণে অনুমমি থাকলেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল করতে তেমন দেখা যায়নি। মহাসড়কে গনপরিবহনও তেমন দেখা যায়নি।  

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের ম্যানেজার নুরুল আনোয়ার মিলন জানান, বেশির ভাগ লঞ্চের শ্রমিকরা বাড়ি চলে গেছে। তারা আসবে কখন আবার লঞ্চ চালাবে কখন। যে কারণে অনেক শ্রমিক না আসার কারণে অনুমতি থাকার পরও চালানো সম্ভব হয়নি।  

যাত্রীবাহী বাস সোহাগ পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট সুপারভাইজার সুজন আহমেদ বলেন, খুলনা থেকে ঢাকায় যেতে একটি গাড়ি কমপক্ষে ৮ঘণ্টা সময় লাগে। ঘাটে আসতে যদি ১২টার বেশি লাগে তাহলে ঢাকা যাবে কিভাবে। যে কারণে গণপরিবহন তেমন আসেনি।  

আবুল, খবির ও নুরজাহানের মত হাজার হাজার ঢাকামুখি যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মমুখি হচ্ছে। এতে গত দুই দিন যাবৎ দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে ঢাকামুখি মানুষের ঢল দেখা যায়। তবে বেলা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ঢাকামুখি যাত্রীদের চাপ কমে আসে।  

দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় সরেজমিন এবং ঘাট সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমনি চিত্র দেখা ও জানা যায়।  

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্যক্তিগত যানবাহন প্রাইভেটকার-মাক্রোবাস ও এ্যাম্বুলেন্স ৪ হাজার ৩শত ৭০টি এবং পণ্যবাহী ট্রাক ৮শত ৯৬টি ফেরি পার হয়েছে। তবে যাত্রী পারাপারের সঠিক কোন তথ্য নেই তাদের কাছে।  

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা বন্দরের পোর্ট অফিসার মো.মাসুদ পারভেজ জানান, ঢাকামুখি যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল শুরু করা হয়।  

news24bd.tv / কামরুল