নাটোরে ধান উপড়ে আগাছানাশক ছিটিয়ে দিল সেনা সদস্য!

নাটোরে ধান উপড়ে আগাছানাশক ছিটিয়ে দিল সেনা সদস্য!

Other

নাটোরের সিংড়ায় মানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের বনকুড়ি গ্রামের এক হত দরিদ্র কৃষক মোজাম্মেল হক। ভ‚মিহীন হিসেবে ২০০৮ সালে নাটোর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছ থেকে একখন্ড জমি পেয়েছিলেন। চাষাবাদ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু প্রকাশ্যে আগাছানাশক ছিটিয়ে উপড়ে ফেলে নষ্ট করা হয়েছে সেই জমির ৪৯ ধান।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রতিপক্ষ একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে সেনা সদস্য মো. সেলিম এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এসময় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মোজাম্মেল হক এর স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগমকেও মারধর করা হয়। পরিবারের লোকজনকে এলাকা ছাড়া করার হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে অভিযুক্ত সেনা সদস্য মো. সেলিম এর পিতা আব্দুল জলিল ওরফে পুটু মুঠোফোনে বলেন, দীর্ঘদিন জমিটি তার দখলে ছিল।

এবছর জোর করে প্রতিপক্ষ ধান রোপন করায় গতকাল (মঙ্গলবার) আমি ও আমার ছেলে সেলিম কীটনাশক দিয়েছি স্বীকার করে ফোন কেটে দেন। পরে আবার ফোন দিয়ে তার ছেলের ফোন নাম্বার চাওয়া হলে ছেলের একাধিক নম্বর এখন তাকে পাওয়া যাবে না বলে জানান তিনি।

স্থানীয় এলাকাবাসী হেকমত, আনোয়ার, মাছেম আলী, বুলবুল আহমেদ সহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৮ সালে নাটোর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের পি.এস.কেস নম্বর ২৪৬/০৭-০৮ মূলে বনকুড়ি মৌজার ২০৫ নম্বর দাগে ৩৫ শতক জমির মালিক হন ভ‚মিহীন কৃষক মোজাম্মেল হক। পরে সিংড়া উপজেলা ভ‚মি অফিস থেকে সার্ভে করে জমির দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়।

এরপর থেকে কৃষক মোজাম্মেল হক ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন। কিন্তু স¤প্রতি প্রতিপক্ষ আব্দুল জলিল ওরফে পুটু ওই জমি নিজের দাবি করে দখলের চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার বাজারের শত শত মানুষের সামনে প্রকাশ্যে আগাছানাশক ছিটিয়ে বিনষ্ট ও ধান গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, তার ভোগ দখলীয় জমিটি দখল নিতে প্রকাশ্যে ধান নষ্ট করা হয়েছে। সেনাবাহিনীতে চাকুরীর সুবাদে তাকে ও পরিবারের লোকজনকে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এবিষয়ে আদালতে মামলার জন্য গিয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিম বলেন, প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে ধান নষ্ট দুঃখ জনক বিষয়। বিষয়টি শুনে তিনি সরেজমিনে গিয়ে দেখে এসেছেন। তবে জমির সাইড নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে বলে জানান তিনি।

সিংড়া থানার ওসি নুর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, এবিষয়ে থানায় অভিযোগ আসে নাই। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) রকিবুল হাসান বলেন, সরকারি জমি বুঝিয়ে দেয়া পর্যন্ত ভূমি অফিসের দায়িত্ব। পরবর্তীতে ওই জমি রক্ষা করার দায়িত্ব তাদের। প্রয়োজনে তারা আদালতের আশ্রয় নিতে পারেন।