বাংলা ভাষায় সোশ্যাল আইডেন্টিটি গড়ে ওঠা নিয়ে কোন আলাপ নেই

বাংলা ভাষায় সোশ্যাল আইডেন্টিটি গড়ে ওঠা নিয়ে কোন আলাপ নেই

Other

আপনি বাংলায় টাজফেলের সোস্যাল আইডেন্টিটি তত্ত্ব লিখে গুগলে সার্চ দেন, দেখবেন কোন ফলা আসছে না। তার মানে বাংলা ভাষায় সোশ্যাল আইডেন্টিটি কীভাবে গড়ে ওঠে তা নিয়ে বিন্দুমাত্র কোন আলাপ নেই।  

অথচ আমাদের আজকের দুনিয়ায় সোশ্যাল আইডেনটিটি কীভাবে গড়ে ওঠে সেটা দিয়ে কনফ্লিক্ট গুলোকে ব্যখ্যা করা যায়। যারা মনে করেন ধর্ম না থাকলে মানুষে মানুষে বিভেদ থাকতো না, তারা যে কী পরিমাণে অজ্ঞ সেটা ভাবলে অবাক লাগে।

ধর্ম ছাড়া কী মানুষে মানুষে বিরোধ হয় না? ১৯৭১ এ বাঙালী বিহারী রক্তক্ষয়ী বিরোধ হয়নি? গায়ের রঙ নিয়ে বিরোধ হচ্ছে না? রেইসিজম হচ্ছে না? এমনকি বাংলাদেশে আবাহনী মোহামেডান খেলা নিয়ে খুনাখুনি হয়নি? রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে বিরোধ হয় না? হয়েছে এবং হচ্ছে।

এর কারণ হচ্ছে মানুষ সব সময়েই কোন কল্পিত গ্রুপের সদস্য হয়ে নিজেকে নিয়ে ভ্যালুড ফিল করতে চায়। তাই সে তার দৃশ্যমান জগতকে ক্যাটেগোরাইজ করে দুই ভাগে। তার নিজের দল আর অন্য দল।

তারপরে সে তার নিজের দলের সার্বজর্নীন আচরণগুলোকে রপ্ত করে। যেমন ধরেন, আজকে কেউ আওয়ামী লীগ করলে কথায় কথায় জয় বাংলা বলবে আর মুজিব কোট পরবে। এক সময় বিএনপি করলে জিয়ার এভিয়েটর সান গ্লাস পরতো অনেকেই বা জিয়ার বুশ শার্ট।

আরও পড়ুন:


সাধারণ হাজতির মতোই থাকতে হবে আরিয়ানকে, মানতে হবে রুটিন

টিভির পর্দায় লাল রঙের পানীয় পান করতে পারবে না নারীরা

প্রেমিকার সঙ্গে হোটেলে শারীরিক সম্পর্ক, সকালে পালালো যুবক

দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যৌনকর্মীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা


এরপরে সে কম্পারিজন করবে তার নিজের গ্রুপের সাথে অন্য গ্রুপের। এবং এই কম্পারিজনটা করবে সে তার ফেভারেবল পয়েন্টে যেইখানে তার জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। উদাহরণ হিসাবে ধরেন, একজন বাংলাদেশি যদি আমেরিকার সাথে কম্প্যেয়ার করে, তাহলে বলব; আরে ওরা তো বাবা মায়ের যত্ন নেয় না, ফ্যামিলি টিকে না ওদের ইত্যাদি।  

সে কখনোই এমন জায়গায় কম্পেয়ার করবে না যেইখানে তার হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই জায়গায় এসে বিপদটা ঘটে। ইন গ্রুপের লোকেরা মনে করে, আমরা মোটামুটি সবাই ভালো কিন্তু ওই অন্যরা সব খারাপ। এইভাবেই শুরু হয় হিন্দু মুসলমান সমস্যা। এইভাবেই শুরু হয় হুতু আর তুতসি সমস্যা। এভাবেই এক ধর্ম আরেক ধর্মকে বলে আমার ধর্মই শ্রেষ্ঠ।  

আইডেন্টিটি বা পরিচিতি নিয়ে এই জটিল সমাজতাত্ত্বিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে অন্তত সমাজের শিক্ষিত অংশকে জানতে অবে কীভাবে আইডেন্টিটি তৈরি হয় আর কোথায় গিয়ে সমস্যাটা তৈরি হয়? কীভাবে এই আইডেন্টিটির চর্চা প্রেজুডিসের জন্ম দিয়ে এক গ্রুপকে আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে শ্রেষ্ঠত্বের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হতে এগিয়ে দেয়।

(মত-ভিন্নমত বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )

news24bd.tv/ কামরুল