নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের (৭৫) বাসায় ককটেল হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
শনিবার (৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের খিজির হায়াত মঞ্জিলে এ ককটেল হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ।
খিজির হায়াত জানান, তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার তার বিরোধ বেঁধে যায়। ওই বিরোধের জের ধরে মির্জা কাদেরের নির্দেশে তার কয়েকজন অনুসারী এই ককটেল হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে। হামলায় কাঁচের বড় বড় দুটি জানালা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।
খিজির হায়াত খানের সহধর্মিনী ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভিন রুনু দাবি করেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে ১৫-২০ জন কাদের মির্জার অনুসারী সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে আমাদের বাসার সামনের সড়কে এসে দাঁড়ায়। এরপর তারা আমাদের বাসার সীমানায় প্রবেশ করে বাসা লক্ষ্য করে ককটেল ছুঁড়তে থাকে। এ সময় তারা বিকট শব্দে ৬টির মত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এ হামলার কিছু দৃশ্য আমাদের সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়। যা আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেছি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও দেখা যায, মুখোশধারী ৫-৬ জন যুবক দেশীয় অস্ত্র হাতে খিজির হায়াত খানের বাসার একেবারে কাছাকাছি চলে আসে। এরপর তারা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুনরায় রাস্তার দিকে চলে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে বসুরহাট পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও কাদের মির্জার ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনোয়ার হোসেন চৌধুরী শিমুলের (৪৩) মাথা পাটিয়ে দেয় একই বাড়ির এক যুবক। কাদের মির্জার অনুসারীরা অভিযোগ করে কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামীলীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে বিবদমান দ্বন্দ্বের জেরে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ নোয়াখালী জেলা পরিষদের সদস্য আকরাম উদ্দিন সবুজের ছেলে মঞ্জিল তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে এ ঘটনার জের ধরে রাত পৌনে ১০টার দিকে কাদের মির্জার অনুসারীরা আকরাম উদ্দিন সবুজের বসুরহাট নতুন বাস স্টানে অবস্থিত ড্রীম লাইন বাস কাউন্টারে অগ্নি সংযোগে করে। স্থানীয়দের তৎপরতায় ফায়ার সার্ভিস তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একপর্যায়ে কাদের মির্জার অনুসারীরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খিজির হায়াত খানের বাসায় ককটেল হামলা চালায়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, হামলার ঘটনার জের ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাদের মির্জা ও খিজির হায়াত খান-মিজানুর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। তবে যে কোনো মুহূর্তে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
এ বিষয়ে মতামত জানতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:
রোববার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ থাকবে
প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ১৩ বছর বয়সী কিশোরীকে দুদিন ধরে ধর্ষণ
নির্বাচন কমিশন নিয়ে রাজনীতিতে আবারও উত্তাপ, যা বলছে বিএনপি-আ.লীগ
পল্লবী থেকে উধাও হওয়া সেই ৩ বান্ধবীকে দেওয়া হল পরিবারের জিম্মায়
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, উপজেলা আওয়া মীলীগ সভাপতির বাসায় ককটেল হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সাবেক কাউন্সিলর শিমুল চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনা স্বীকার করে বলেন, তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ড্রীম লাইন বাস কাউন্টারে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। তবে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ৮ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা এলাকার বসুরহাট বাজারের রুপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের ওপর আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়।
news24bd.tv নাজিম