আজ দ্বিতীয় ধাপের ভোট, নির্বাচনী সহিংসতায় মৃত্যু ২৯

আজ দ্বিতীয় ধাপের ভোট, নির্বাচনী সহিংসতায় মৃত্যু ২৯

অনলাইন ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার দিনও আজ। এ ছাড়া গতকাল নির্বাচন কমিশন (ইসি) চতুর্থ ধাপের ৮৪০টি ইউপির নির্বাচনী তফসিলও ঘোষণা করেছে। এসব ইউপিতে ভোট হবে আগামী ২৩ ডিসেম্বর।

 

এবারের নির্বাচনে মূলত ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং এ দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। ইউপি নির্বাচন ঘিরে গতকাল পর্যন্ত ২৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে সাতজন এবং পরে আরো ২২ জন নিহত হন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পাবনার সুজানগরের গুলিবিদ্ধ সবুজ হোসেন।

এ ছাড়া মঙ্গলবার রাতে পুলিশি হয়রানির শিকার হয়ে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক এজেন্টের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে গত মঙ্গলবার থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত কমপক্ষে ১০টি সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৬ জন। এর আগে বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সংঘর্ষে আহত হয়েছেন দুই শতাধিক ব্যক্তি।  

পাবনার সুজানগরে ভায়না ইউনিয়নে স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ওমর ফারুকের নির্বাচনী কার্যালয়ে গত সোমবার রাতে নৌকার প্রার্থী আমিন উদ্দিনের সমর্থকরা হামলা, ভাঙচুর ও গুলি চালান। এতে ফারুকের কর্মী সবুজ হোসেন (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান।

এ ছাড়া টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর ধোপাখালী ইউনিয়নে মঙ্গলবার রাতে পুলিশের অভিযানের সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন তালুকদার মিন্টুর প্রধান এজেন্ট মোতাহের হোসেনের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রার্থী মিন্টু ও নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, অস্ত্র ও বোমা আছে—এ অভিযোগ তুলে অভিযানের সময় মোতাহের পালাতে গেলে পুলিশ তাঁকে ধরে টানাহেঁচড়া করে। এতে মোতাহেরের মৃত্যু হয়। তবে ধনবাড়ী থানার উপপরিদর্শক এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এ নির্বাচনে সহিংসতা রোধে ইসি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেন, ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না।

নির্বাচনে সহিংসতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে বরাবরই কমবেশি সংঘাত হয়ে থাকে। এটা রাজনৈতিক কারণে ঘটে না। স্থানীয় সমীকরণ, আঞ্চলিক বিবাদ, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বসহ নানা বিষয় থাকে সংঘাতের পেছনে। এবার যেহেতু বিএনপি জোটের দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, সে কারণে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। আমরা চেষ্টা করছি একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে। ’

 আরও পড়ুন:

যে দোয়ায় মিলবে জান্নাত


দ্বিতীয় ধাপে আজ দেশের ১১৪টি উপজেলার ৮৩৮টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ হবে। এ ধাপে নির্বাচন কমিশন ৮৪৮টি ইউপির জন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করলেও কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে সব পদে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে গেছেন। ফলে ওই পাঁচ ইউপিতে ভোটের প্রয়োজন নেই। এ ছাড়া শরীয়তপুরের চিতলিয়া ইউপির নির্বাচন বাতিল এবং টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারের আটিয়া, নেত্রকোনার মদনপুর, রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিত্মরম ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের জিরতলী ইউপিতে প্রার্থীর মৃত্যু, অনিয়ম ও সীমানাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্বাচন স্থগিত ও বাতিল করা হয়েছে। ফলে ভোটগ্রহণ হবে ৮৩৮ ইউপিতে।

চেয়ারম্যান পদে ভোটের প্রয়োজন নেই ৭৫টি ইউপিতে। সব মিলিয়ে এ ধাপের নির্বাচনে বিনা ভোটের ৮১ চেয়ারম্যানসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ৩৫৭।

news24bd.tv রিমু