বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম না হলে আমি আমার মা ও দুই কন্যাকে মা বলে ডাকতে পারতাম না। বাবা আমাকে ও আমি বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারতাম না!
আমার দুটো বোন আমাকে ডাকতে পারতো না ভাই বলে, আমিও বোনের মত মধুর শব্দে ডাকতে পারতাম না ওদের। আমার কন্যাদের মা ও আমি পরষ্পরের চোখের দিকে তাকিয়ে ভালোবাসি বলে যে তৃপ্তি পাই তা কি এদেশটার জন্ম না হলে পারতাম?
আপনি হয়ত বলতে পারেন বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে উর্দুতেই ডাকতাম ও তাতেই তৃপ্ত হতাম। আমি মানতে পারি না।
বহুভাবে উর্দু শুনেছি কিন্তু বাংলার মত মজা পাইনি। চিন্তা করে দেখুন "পাক সার জামিন সাদ বাদ" আর "আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি"র মধ্যে কী যোজন যোজন পার্থক্য!বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্মের পেছনের ইতিহাস আপনাদের জানা। ত্রিশ লক্ষ শহিদ, দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম ও অসংখ্য পরিবারের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার গল্পের শিরোনাম বাংলাদেশ।
এ দেশটির জন্ম না হলে আপনি আমি বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারতাম না।
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম না হলে আমার মত এক সাধারণ কাজী শরীফ আজ বিচারকের আসনে বসতে পারতো না। এই যে মানুষ সম্মান করে, গ্রামের মানুষ আমার মা বাবাকে আলাদা চোখে দেখে ও সে আনন্দে আমার মা বাবা অশ্রুসিক্ত হয় এর সবকিছুর পেছনে মূল কৃতিত্ব এ দেশটার।
যারা এদেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, সম্ভ্রম হারিয়েছেন, যুদ্ধ করে অঙ্গ হারিয়েছেন, যুদ্ধ শেষে ঘরে ফিরে প্রিয়জনের মুখ দেখেননি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কোন শব্দই যথেষ্ট নয়।
আমি এক সাধারণ মানুষ। এদেশের জন্ম না হলে আমার অস্তিত্বই থাকতো না। যে মানুষটা আজ বাংলায় কথা বলি, লিখি, হাসি তার জীবন হয়ে যেতো বিপন্ন।
যারা আমার মত অসংখ্য মানুষকে এ সুন্দর জীবনের স্বাদ পাইয়ে দিতে অবদান রেখেছেন পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ তাঁদের ভালো রাখুক।
বাংলাদেশের বিজয় লাভের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে একটা দুর্নীতিমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। মহান রাব্বুল আলামিন আমার সে স্বপ্নও পূরণ করুক।
(সোশ্যাল মিডিয়া বিভাগের লেখার আইনগত ও অন্যান্য দায় লেখকের নিজস্ব। এই বিভাগের কোনো লেখা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়। )
আরও পড়ুন
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
news24bd.tv এসএম