অকৃতকার্যদের ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

অকৃতকার্যদের ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় কৃতকার্যদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘কৃতকার্যদের অভিনন্দন, অভিভাবকদেরও অভিনন্দন। সকলেই কষ্ট করেছেন।

যারা কৃতকার্য হতে পারেনি তাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে পড়াশুনার সমস্যা হয়েছে।

তাদের আবার ভালোভাবে পড়াশুনা করতে হবে। অকৃতকার্য হলেও সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে না। যে বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে সে বিষয়ের পরীক্ষা পরের বছর দিয়ে পাশ করতে হবে। পাশাপাশি তারা পরবর্তী শ্রেণির কার্যক্রমটা চালিয়ে নিতে পারবে।
তারা পিছিয়ে থাকবে না। সে ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এ বিষয়ে অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে। অভিভাবকরা শুধু অভিভাবকই নন, কিছু ক্ষেত্রে তাদের শিক্ষকের ভূমিকা পালন করতে হবে। ’

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলাফল ঘোষণা পাশাপাশি নতুন বছরের নতুন বই দেওয়া হচ্ছে। বই হাতে পাওয়ার আনন্দ আলাদা, নতুন বই মলাট লাগানো ও তাতে নাম লেখা, এটা অন্য রকম অনুভূতি।

তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী যাতে পিছিয়ে না থাকে, তাদের উপযোগী করেও বই প্রস্তুত করে দিচ্ছি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিজেদের ভাষায় বই তৈরি করে দিচ্ছি। এ পর্যন্ত আমরা তাদের ৫টি ভাষা পেয়েছি। সে ভাষায় বই করে দিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্মিলিতভাবে করোনায় ভার্চুয়াল শিক্ষা চালু রেখেছে। সবার হাতে বই দিয়ে ঘরে বসে শিক্ষাকার্যক্রম চালানোর সুযোগ চালু করা হয়েছে। চার কোটির বেশি শিক্ষার্থীর হাতে ৩৪ কোটিরও বেশি বই ১ জানুয়ারি ২০২২ এরমধ্যে দেওয়া হবে। ২০১০ থেকে আমরা এ কার্যক্রম করে আসছি। একটা বিশাল অংকের বই আমরা দিয়েছি।

তিনি বলেন, অনলাইনে শিক্ষাটা চালু রাখতে হবে। করোনা কখনও কমছে, কখনও বাড়ছে। শীতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়লে যেনো অনলাইনে শিক্ষাটা চালু রাখা যায়। এর জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা ব্যবস্থা করবো। সংসদটিভি সবসময় তারা ব্যবহার করতে পারবে। ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’, এ কার্যক্রমে সবার সহযোগিতা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, টিকা প্রথমে শিক্ষকদের দিয়েছি, এখন শিক্ষার্থীদের দিচ্ছি। সব শিক্ষার্থী যেনো টিকা দেয়, সে দিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।

এসময় অভিভাবক ও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালি পড়ালেই হবে না। শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিতে অভিভাবকরা খেয়াল রাখবেন। শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও দুই লাখ শিক্ষকদের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। অমনোযোগী হলেও মারধর নয়, কেয়ার করতে হবে। এটাও একধরনের প্রতিবন্ধিতা। এদিকে আরও বেশি নজর দিতে হবে।

শহরে বাচ্চাদের নানা সংকট তুলে ধরে তিনি বলেন, বাচ্চারা টিভি মোবাইল ফোন নিয়ে সময় কাটায়। শহরে এককভাবে থাকতে গিয়ে বাচ্চাদের চাহিদায় নজর দিতে পারে না। বাচ্চারা চায় তাদের সাথী, বাবা-মাকে সাথী হতে হবে। মানসিকভাবে বেড়ে ওঠার শিক্ষা দিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদরাসা শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। কারিগরি ভোকেশনাল ট্রেনিং দিচ্ছি। কোনো কাজকে ছোট করে দেখা উচিত নয়। নিজের কাজ নিজে করা, সেই শিক্ষাটাও দিতে হবে। কৃষকের ছেলে বড় হয়ে তার বাবাকেই বেশি সম্মান দেওয়া উচিত। শিক্ষা নিয়ে বড় হয়েও বাবার সঙ্গে মাঠে নেমে কাজ করা উচিত।

তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী নাগরিক তৈরি করতে হবে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সমাজকে এমনভাবে গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা আমার, যাতে কেউ কাউকো কাজের জন্য হুকুম দিতে না পারে। নিজের কাজ নিজে করে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন


১৮টি প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি

news24bd.tv এসএম