বিদ্যুৎ সঙ্কটে বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য সেবা

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের প্রধান প্রবেশদ্বার

বিদ্যুৎ সঙ্কটে বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য সেবা

শাকিলা ইসলাম জুঁই • সাতক্ষীরা প্রতিনিধি 

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে গেল এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত অপারেশন ও সিজারিয়ান রোগীরা।  

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সিজারিয়ান মা ও নবজাতক অসহনীয় গরমে ছট ফট করছেন। ফলে তারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

এদিকে, বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ পানির পাম্প। ফলে পানি সঙ্কটে পড়েছেন হাসপাতালের লোকজন।  

অনেক কষ্টে অন্য স্থান থেকে পানি এনে গোসল, শৌচকর্ম ও অন্যান্য কাজ সারতে হচ্ছে। পানির বালতি তিন তলায় টেনে তুলতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে।

 

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই সরকারি হাসপাতালের এমন অব্যবস্থাপনা দেখে গ্রাম-গঞ্জ থেকে অপারেশন করতে আসা অসহায় ও গরিব রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন।  

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিসাধীন শেফালি খাতুনের স্বামী মহব্বত আলি বলেন, ‘৩দিন আগে আমার স্ত্রীকে সিজার করার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করি। কর্তৃপক্ষ বলেছে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই। যেটুকু সময় বিদ্যুৎ পাওয়া যায় তাও লো ভোল্টেজ। তাই তোমার স্ত্রীকে যদি সিজার করাতে হয়, তাহলে জেনারেটরের তেল কিনে দিতে হবে। আমি তেল কিনে দিলে তারপর জেনেরটের খাটিয়ে ডাক্তারা আমার স্ত্রীকে সিজার করেন। ’

news24bd.tv

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক রোগী জানান, ৭ দিন আগে তিনি ভর্তি হয়েছেন। এরপর থেকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে বিদ্যুৎ ও পানি নেই। কিছু বললে ডাক্তার ও নার্সরা চলে যেতে বলেন। তিনি এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাক্তার তওহীদুর রহমান বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের ট্রান্সফর্মারটি নষ্ট হয়ে যায়। এখানে প্রয়োজন ১৫০ কেভি পাওয়ার ট্রান্সফর্মার। বিদ্যুৎ অফিসে এ ব্যাপারে বার বার বলা হলেও তারা ৫০ কেভি পাওয়ারের বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রান্সফর্মার দিতে পারছেন না। ’ 

‘এ বিষয়ে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ১৫০ পাওয়ার কেভি ট্রান্সফর্মার চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। নতুন ট্রান্সফরমারটি পাওয়া গেলে 
হাসপাতালের দূরবস্থা লাঘব হবে। ’

বর্তমানে হাসপাতালে ৩০০ জন রোগী ভর্তি আছেন। বিদ্যুতের অভাবে তারা প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছের। বিশেষ অপারেশনের রোগী। আর এসব কারণে মূলত দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মো. ইফতেখার হোসেন জানান, ১৫০ কেভি ট্রান্সফর্মারটি দুই-একদিনের মধ্যেই চলে আসবে। শিগগিরই অপারেশনসহ হাসপাতালের যাবতীয় কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।  


শাকিলা/অরিন/news24bd.tv

সম্পর্কিত খবর