চীনে রুশ মডেলের মৃত্যু নিয়ে হইচই

ভ্লাদা ডিজিউবা

চীনে রুশ মডেলের মৃত্যু নিয়ে হইচই

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভ্লাদা ডিজিউবা, বয়স ১৪ বছর।  একজন রুশ কিশোরী মডেল। সাংহাই ফ্যাশন উইকে অংশ নিতে চীনে অবস্থান করছিলেন।  কিন্তু হঠাৎ করেই সাংহাইতে মারা গেছেন এ মডেল।

আর এ নিয়ে শুরু হয়েছে হইচই।  মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে দু'দেশ থেকে দুই ধরনের তথ্য দেওয়া হয়েছে।

রুশ গণমাধ্যমের দাবি, রাশিয়ার ওই মডেল চীনের ইএসইই মডেল এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, অতিরিক্ত চাপ দিয়ে কাজ করানোয় ওই মডেলের মৃত্যু হয়েছে।

তবে ওই মডেল এজেন্সির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সে অন্য মডেলদের সঙ্গে আনন্দ নিয়ে কাজ করছিল।  

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্লাদা দুর্বল অনুভব করছিল এবং তার মাথা ঘোরাচ্ছিল। এ কারণে বুধবার তাকে সাংহাই হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর তার অবস্থার অবনতি হয় এবং গত শুক্রবার সে মারা যায়।  news24bd.tv

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম চীনা গ্লোবাল টাইমসে বলা হয়েছে, রক্তে বিষাক্ততার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

তবে রাশিয়ার সাইবেরিয়ান টাইমসে বলা হয়েছে, রুশ মডেলের মৃত্যু হয়েছে মেনিনজাইটিসে (মস্তিষ্ক ও স্পাইনাল কর্ডের পাশে অবস্থিত ঝিল্লীর প্রদাহজনিত রোগ)। সাংহাইয়ের ওই ফ্যাশন উইকে অক্লান্ত পরিশ্রম ও মানসিক চাপের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য সানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্লাদা ডিজিউবা নামের ১৪ বছর বয়সী ওই রাশিয়ার মডেল চরম অবসাদ ও মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগে ভুগছিল।

রাশিয়ার পার্ম মডেলিং এজেন্সির পক্ষ থেকে মডেলিংয়ের কাজে তিন মাসের জন্য চীনে গিয়েছিল ভ্লাদা।

সাংহাইয়ে ১২ ঘণ্টার একটি ফ্যাশন শোতে কঠোর পরিশ্রমের কারণে অবসন্ন হয়ে ঢলে পড়েন ডিজিউবা। পরে তিনি কোমায় চলে যান। এর দুদিন পর তার মৃত্যু হয়।

বেশ কিছু সংখ্যক রাশিয়ান মডেলকে চীনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ভ্লাদার এই মর্মান্তিক ঘটনার পর অতিরিক্ত পরিশ্রমের বিষয়টি মডেলদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।

দ্য সাইবেরিয়ান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই কিশোরী মডেল যখন ক্যাটওয়াক করতে যাচ্ছিল, এর ঠিক আগ মুহূর্তেই তার শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়।

ভ্লাদার মা ওকসানা জানান, সে ফোনে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল এবং বাড়ি ফিরতে চেয়েছিল।

শোকাহত ওকসানা বলেন, ‘সে ফোন করে বলেছিল, মা আমি খুব ক্লান্ত, আমার অনেক ঘুম দরকার। ’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি ঘুমোতে পারছিলাম না, তাকে বারবার ফোন দিতে থাকি, তাকে হাসপাতালের যাওয়ার জন্য বলি। ’

ভ্লাদাকে বৈধভাবে সপ্তাহে তিন ঘণ্টা কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সে মারা যাওয়ার আগে তার ছোট বোনের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ভিসা পাওয়ার চেষ্টা করছিল।

পার্ম মডেলিং এজেন্সির প্রধান এলভিরা জাইটশেবা বলেন, এমন ঘটনা ঘটবে তা কেউই আশা করেনি।

এদিকে, এ ঘটনার পর ওই মডেলের কাজের পরিস্থিতি বিশ্লেষণের দাবি জানিয়েছে মস্কো। কিশোরী মডেল ভ্লাদা এশিয়ায় থাকাকালে কেমন পরিশ্রম করেছে সেটার বিশ্লেষণই এখন প্রস্তুত করছে রাশিয়া।

তবে ক্রেমলিনের মানবাধিকারকর্মী পাভেল মিকভ ব্যক্তিগতভাবে ওই কিশোরীর মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করছেন।

সম্পর্কিত খবর