কনেযাত্রী এলেন বরের বাড়িতে, বিয়ে করে আলোচনায় দম্পতি

কনেযাত্রী

কনেযাত্রী এলেন বরের বাড়িতে, বিয়ে করে আলোচনায় দম্পতি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

বাংলাদেশে বিয়ের যে প্রচলিত প্রথা সেটা ভেঙে আলোচনার জন্ম দিয়েছে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি। বুধবার এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী বর তার আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যান্য সহযাত্রীদের নিয়ে কনের বাড়ি যান বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে এবং সেখান থেকে কনেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন।

কিন্তু শৈলকূপা উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকার ইউএনও’র গাড়ি চালক আব্দুল কাদেরের মেয়ে ইতি সেলিনা এ ক্ষেত্রে উল্টো কাজটি করেছেন।

তিনি তার সহযাত্রীদের নিয়ে একই উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের সামসুদ্দিন লস্করের পুত্র এম এ মালেক শান্তর বাড়িতে হাজির হন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।

প্রথাগতভাবে বিয়ের অনুষ্ঠান স্থলের প্রবেশ মুখে যেভাবে বরকে বরণ করা হয়, তেমনি এই বিয়েতেও কনেকে ফুলের মালা পরিয়ে, মিষ্টি খাইয়ে বরণ করে নেন বরপক্ষের আত্মীয়স্বজন। এরপর বর-কনে আসনে বসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। সব অতিথিদের আপ্যায়ন করানো হয় এবং কনে থেকে যান ছেলের বাড়িতে।

কনেযাত্রী

ব্যতিক্রমধর্মী এই বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে বরের বাড়িতে যেমন উৎসাহী জনতার ভিড় ছিল, তেমনি কনের বাড়িতেও অনেক মানুষ জড়ো হন। এই প্রথার বাইরের বিয়ের প্রস্তাবটি আসে মূলত বর শান্তর পক্ষ থেকে। তারা চেয়েছেন এই বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।

এ ব্যাপারে কনে সেলিনা জানান, ছেলেরা যদি পারে মেয়েদের বিয়ে করে নিয়ে আসতে, তাহলে মেয়েরা কেন পারবে না। নতুন সিস্টেমে বিয়ে করতে পেরে আমি অনেক খুশি। প্রথমে ভেবেছিলাম এভাবে বিয়ে করব, ঠিক হবে কিনা। কিন্তু পরে আমি রাজি হই। এমন আনকমনভাবে বিয়ে এর আগে আর কেউ করেনি। বিয়েতে এজন্য অনেক আনন্দ হয়েছে। শুরুতে দুই পরিবারের আত্মীয়স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশী আপত্তি জানালেও পরে তারা রাজি হন এবং সাদরেই এই প্রস্তাবকে গ্রহণ করেন।

এদিকে, পুরুষশাসিত সমাজে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের বহিঃপ্রকাশে এই প্রথা ভেঙে বিয়ে করার বিষয়টিকে প্রতীকী বলে জানিয়েছেন বর এম এ মালেক শান্ত।
news24bd.tv/কামরুল