বিশ্বকাপ জয়ের পেছনের গল্প শোনালেন মেসি

সংগৃহীত ছবি

বিশ্বকাপ জয়ের পেছনের গল্প শোনালেন মেসি

অনলাইন ডেস্ক

এক জীবনে সম্ভাব্য প্রায় সবকিছুই পেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। ক্লাব ফুটবলে মেসির সাফল্য যে কোনো ফুটবলারের জন্যই স্বপ্নের মতো। তবে জাতীয় পোশাকে বিশ্বকাপের নেশা তাকে আজীবন ভুগিয়েছে। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতিবারই হতাশ হয়েছেন মেসি।

সেই সাথে নিন্দুকদের সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়েছে মেসিকে। তবে ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় এসে সব জবাব দিয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরে আর্জেন্টাইনদের ৩৬ বছরের শিরোপা খরা ঘুচিয়ে দিয়েছেন এলএমটেন।  

অথচ সহজ ছিল না বিশ্বকাপ জয়।

বিশ্বকাপ জয়ের পথে প্রথম ম্যাচেই হেরে বসে তার দল। ওখানেই মেসির ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলে অনেকেই। তবে হাল ছেড়ে দেননি মেসি। লড়ে গেছেন দলকে নিয়ে। বিশ্বকাপ জয়ের পর তাই আর সবার থেকে আনন্দটা তারই বেশি। যেখানেই যাচ্ছেন স্বপ্নের বিশ্বকাপ ট্রফি সাথে রাখছেন। ঘুমালেও ট্রফি সঙ্গে নিয়ে ঘুমাচ্ছেন। এক মুহূর্তের জন্য হাতছাড়া করতে চাচ্ছেন না বিশ্বকাপ ট্রফিটি।

বিশ্বকাপ জয়ের পর আর্জেন্টিনার স্থানীয় সময় সোমবার রাতে দেশে ফিরে মেসিরা। দেশের মানুষ তাদের রাজকীয় সংবর্ধনা দেয়। ট্রফি জয় থেকে দেশে ফেরার জন্য বিমানে চেপে বসা, কাপ নিয়েই ঘুমিয়ে যাওয়া- এমন সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছিলেন মেসি।

পরে একটি ভিডিও পোস্ট করে আবেগঘন বার্তাও দিয়েছেন। যেখানে নিজের শৈশব, বিশ্বকাপ নিয়ে স্বপ্ন, ২০১৪ আসরের দুঃখগাথা, ডিয়েগো ম্যারাডোনা, কোচিং স্টাফসহ অনেক বিষয় উঠে এসেছে।

মেসি লিখেছেন, ‘গ্র্যান্ডোলি থেকে কাতার। প্রায় ৩০ বছর। বিশ্বকাপ জিততে তিন দশকের কাছাকাছি সময় লাগল। ফুটবল আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। কিছু দুঃখও দিয়েছে। আমি সব সময় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। কখনও চেষ্টা বন্ধ করিনি। বিশ্বাস ছিল কখনও হাল ছাড়ব না। ’

যোগ্য দল হিসেবেই তারা বিশ্বকাপ জিতেছেন উল্লেখ করে মেসি লিখেন, ‘আমরা বিশ্বকাপ পেয়েছি, কারণ বাকি সবার থেকে আমরা ভালো খেলেছি। আগের বিশ্বকাপগুলোয় আমরা এভাবে খেলতে পারিনি। যেমন ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও জিততে পারিনি আমরা। এবার সবাই অনেক পরিশ্রম করেছিল। সবাই আন্তরিকভাবে জিততে চেয়েছিল। এই বিশ্বকাপটা ছেলেদের প্রাপ্য। এ ভাবেই প্রতিযোগিতা শেষ করতে চেয়েছিলাম আমরা। ’

এরপর তিনি প্রয়াত কিংবদন্তি ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেন, ‘এই বিশ্বকাপটা ডিয়েগোর (ম্যারাডোনা) জন্যও। তিনি আমাদের স্বর্গ থেকে উৎসাহিত করেছিলেন। ’

এই বিশ্বকাপ সবার উল্লেখ করে মেসি লিখেন, ‘এই বিশ্বকাপ তাদের সকলের জন্য যারা ফলাফলের দিকে না তাকিয়ে সবসময় জাতীয় দলকে উৎসাহিত করেছেন। তাদের জন্য যারা বেঞ্চে বসে থেকেছে খেলার সুযোগ না পেয়ে। ২০১৪ সালে যারা কাছে পৌঁছেও জিততে পারেনি, এই বিশ্বকাপ তাদেরও। ’

‘সবার একটাই আকাঙ্ক্ষা ছিল, সবকিছু আমাদের ইচ্ছা মতো হয় না। আমাদের দলটা সত্যিই সুন্দর। কোচিং স্টাফ, টেকনিক্যাল স্টাফ- তাদের হয়তো সবাই চেনেন না। তারাও এই স্বপ্নটা সফল করার জন্য দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। ’

অনেক ব্যর্থতার মাঝেই যে আগামীর সাফল্য লুকিয়ে থাকে, মেসি সেটিও মনে করিয়ে দেন সবাইকে। লিখেন, ‘অনেক সময় ব্যর্থতা যাত্রা পথের সঙ্গী হয়। সেগুলো আমাদের শেখায়। হয়তো সেগুলো হতাশা নিয়ে আসে। তবু ব্যর্থতা ছাড়া সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়। আমার হৃদয় থেকে সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা। ’

news24bd.tv/আমিরুল