মোরেলগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে পুলিশি তাণ্ডবের অভিযোগ

সংগৃহীত ছবি

মোরেলগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িতে পুলিশি তাণ্ডবের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১২ নং জিউধরা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামে জ্যোতিন অধিকারির বাড়িতে তালা ভেঙ্গে পুলিশি তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এসময় এলোমেলো করা হয়েছে দেবতার বিগ্রহ এবং ভাঙ্গা হয়েছে পূজা ও কীর্তনের সামগ্রী।

জানা গেছে, সনজিত অধিকারী, প্রসেনজিৎ অধিকারী ও তাদের পিতাঃ জ্যোতিন অধিকারি এই বাড়িতে কয়েক বছর যাবত বসবাস করছে।

গত রাতে গ্রাম পুলিশ রনজিত মন্ডলকে সাথে নিয়ে লক্ষ্মীখালী পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা সুফল সরকার বাড়িটির সামনে গিয়ে চিৎকার করে বাড়ির মালিকদের ডাকতে থাকে। সে সময়ে বাড়ির ভেতর থেকে কেও সাড়া না দিলে পুলিশ তালা ভেঙ্গে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে। একইভাবে মন্দিরের তালা ভেঙ্গে সেখানেও প্রবেশ করে।

সেসময় ঘটনাস্থলে পরিবারের কেও না তাকায় গ্রাম পুলিশ রনজিতের মাধ্যমে তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সনজিতের ভাই প্রসেনজিৎ অধিকারিকে মুঠোফোনে জানায়, "তোমাদের বিরুদ্ধে ওসি সাহেবের কাছে অভিযোগ আছে।

আমি তোমাদের বাড়ি থেকে কিছু আলামত ক্যাস্পে নিয়ে যাচ্ছি, তোমরা আগামীকাল সকাল ১০টায় লক্ষ্মীখালী পুলিশ ক্যাম্পে যোগাযোগ করবে"।  

সনজিতের ভাই প্রসেনজিৎ বিভিন্নভাবে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা ওখানে পৌঁছে যেতেও চায় কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা সুফল তাদের কোনও কথাই শোনেননি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের।  কিছুক্ষণের মধ্যে তারা তাদের বাড়ি পৌঁছে সেখানে ছত্তার খলিফা ও মজিবরসহ কয়েকজন অপরিচিত লোককে দেখতে পায়।

সনজিতদের উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। সনজিত, প্রসেনজিৎসহ ওদের বাড়ির লোকেরা দেখতে পায় ইতিমধ্যে তাদের ঘরের বেশ ক্ষতি হয়েছে, বিশেষ করে মন্দিরের দেবতার বিগ্রহ গুলিতে এলোমেলো করে ভাঙ্গা হয়েছে।  ঢোল, ডংকা ও তছনছ করা হয়েছে নিত্যপূজার সামগ্রী।

জানা গেছে, সনজিত অধিকারী কয়েক বছর আগে ২০১৮ সালে এখানে জমি কিনে নতুন বাড়ি তৈরি করে। একই খতিয়ানভুক্ত জমি ক্রয় করে একই এলাকার ছত্তার খলিফা। সনজিতের ক্রয়কৃত এই জমিতে বাড়ি নির্মান কাজ শেষের দিকে চলে এলে ছত্তার দাবি করে এই জমি তার। কিন্তু সনজিত অধিকারির দলিল, দলিলের চৌহদ্দি, নামজারি সবকিছু সঠিক থাকায় স্থানীয় শালিসিতে সে জিতে যায় কিন্তু ছত্তারের হয়রানি থেকে রক্ষা পায় না।  

অবশেষে সনজিত আদালতের দারস্থ হয়, জারি হয় ১৪৪। কোর্টের বিচার শেষে সেই রায়টিও এল সনজিত দের পক্ষে। কিন্তু রায় পেলেও পুলিশ কর্মকর্তা সুফল সেসব তোয়াক্কা  না করে তাদের ঘর ভাঙ্গচুর করে। এরপর ঘটনাস্থলে যান মোরেলগঞ্জ উপজেলা পূজা উজ্জাপন পরিষদের আহবায়ক শ্রী শংকর রায়, সাংবাদিক মোঃ বাপ্পা ও সাংবাদিক গণেশ পাল। সেখানে আরও উপস্থিত হন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সে এলাকার গন্যমান্যরা।  

উপস্থিত সকলে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। মুঠোফোনে শ্রী শংকর রায় কথা বলেছেন পুলিশ কর্মকর্তা সুফল সরকারের সাথে। পুলিশ কর্মকর্তা সুফল সরকার বলেছেন, আমি বাড়িটির গেট ভেঙ্গে বাড়িতে ঢুকেছিলাম, কিছু জিনিস পুলিশ ক্যাম্পে নিয়ে এসেছি ওসি সাহেবের নির্দেশে কিন্তু দেব বিগ্রহ আমি ক্ষতি করিনি।

news24bd.tv/আলী