‘সব শ্যাষ আমগো, আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি’

সংগৃহীত ছবি

‘সব শ্যাষ আমগো, আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি’

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর বঙ্গবাজার কয়েকটি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ৫ হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে দোকান মালিক সমিতি। আর এই ঘটনায় দুই হাজার কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। যার ফলে, কয়েক হাজার ব্যবসায়ী সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

‘চারটা দোকান শ্যাষ আমগো।

নিঃস্ব হয়ে গেছি আমরা। আল মক্কা গার্মেন্টস, নামকরা দোকান আছিল আমগো। চারটা দোকানে কয়েক কোটি টাকার মাল। সব তছনছ হয়ে গেছে।
ভোর ৫টায় (৬টা ১০ মিনিটে) আগুন লাগছে। ৭টায় আইছি, ভাবছিলাম ক্যাশ থেকে খাতাটা নেবো। অনেকের লগে দেনা- পাওনা আছে, বাকির খাতা। ঢুকতে দেয় নাই, পরে মাইরা ঢুকছি। এমন সময় ঢুকছি এসি আমার চোখের সামনে ব্রাস্ট (বিস্ফোরণ) হয়ে গেছে। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করছে। ’

এভাবেই বঙ্গবাজার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আল মক্কা গার্মেন্টসের কর্মচারী ও তেজগাঁও কলেজের বিবিএ’র শিক্ষার্থী আবু রাহাত অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস তো অনেক চেষ্টা করছে, আগুন নিভাইতে পারে নাই। কেমনে পারবো, ওগো কাছে কোনো যন্ত্রপাতি আছে? একটা পানির ট্যাংক আর দুইডা পাইপ আছে। বাইরের দেশে দেহেন কত সুন্দর যন্ত্রপাতি, আগুন লাগলে নিভায়া ফালায়। আগুনে বেলুন নিক্ষেপ করে, আর আমগো এইহানে কিছু নাই। ওগো দোষ দিয়া লাভ নাই। তাগো অবস্থাও যায় যায়। তারাও রোজা রাখছে, আমিও রোজা রাখছি। ওগো কাছে যন্ত্রপাতি থাকলে আজকে আগুন নিভাইতে পারতো। ’

রাহাত বলেন, ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আগুন লাগছে, নিভা গেছে। বঙ্গমার্কেটে আগুন লাগছে সেটা কেন নেভে নাই? বঙ্গমার্কেট রাতে বন্ধ হয় ১০টায়, খোলে সকালে ৮টা বাজে। সেসময় কাট-আউট চালু করলে পুরো মার্কেটে বিদ্যুতের লাইন চলে। তার আগে তো কারেন্টের কোনো কাজ নাই। কারেন্টের কাজ না থাকলে আগুন ধরে কেমনে? এটা পরিকল্পিত। এইটা পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়েছে। ’

এর আগে এদিন ভোর ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ভোর ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। সংবাদ পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৬টা ১২ মিনিটে। পর্যায়ক্রমে একের পর এক ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয়।

এদিকে বঙ্গবাজারের আগুন ছড়িয়ে পড়ে মহানগর শপিং কমপ্লেক্সে। সেই আগুনে পুড়েছে হেড কোয়ার্টারের ভেতরের চারতলা পুলিশ ব্যারাক ভবন।

সেসময় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার জানান, পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ভেতর পুলিশ ব্যারাকের চারতলা ভবনে আগুন লেগেছে। এতে ওই ভবনের সবকটি কক্ষ পুড়ে গেছে। ১১টা ১৫ মিনিটে জলকামান এসেছে। ফায়ার সার্ভিস পানি দিচ্ছে। ভবনটি মহানগর শপিং কমপ্লেক্স লাগোয়া। পরে প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা জ্বলে, কয়েকটি মার্কেটের কয়েকশ দোকান পুড়িয়ে অবশেষে নিয়ন্ত্রণে আসে বঙ্গবাজার মার্কেটের আগুন।

news24bd.tv/আলী